অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে খুলনা শিপইয়ার্ড
মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা (৩১ আগষ্ট) : মাত্র দুই বছর আগে পাঁচটি ছোট যুদ্ধজাহাজ (পেট্রোল ক্রাফট) তৈরি করে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নতুন অধ্যায় শুরু করেছিল খুলনা শিপইয়ার্ড। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবার বড় আকারের অত্যাধুনিক আরো দুটি যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে সংস্থাটি। সশস্ত্র বাহিনীতে এগুলো লার্জ পেট্রোল ক্রাফট বা এলপিসি নামে পরিচিত। দেশের মাটিতে বড় যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের উদ্যোগ এটাই প্রথম। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর খুলনায় এই যুদ্ধজাহাজ তৈরির কাজ উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।
শিপইয়ার্ড সূত্র এবিসি নিউজ বিডিকে জানায়, জাহাজ নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ৩০ জুন নৌবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি হয় খুলনা শিপইয়ার্ডের। প্রতিটি জাহাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। একই ধরনের দু’টি এলপিসি চীন থেকে তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
সূত্র আরো জানায়, প্রতিটি এলপিসি’র দৈর্ঘ্য হবে ৬৪ দশমিক ২ মিটার ও প্রস্থ ৯ মিটার। এর গভীরতা হবে ৪ মিটার। সমুদ্রপথে ঘণ্টায় ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলবে। এই যুদ্ধজাহাজে একসাথে ৭০ জন থাকতে পারবেন। দুই বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। চীনের যুদ্ধজাহাজ বিশেষজ্ঞরা এতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, প্রথমে দেশের মাটিতে এত বড় উদ্যোগ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অনেকে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সুপারিশে এলপিসি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় খুলনা শিপইয়ার্ডকে ।
খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এস. ইরশাদ আহমেদ জানান, দেশের মাটিতে তৈরি যুদ্ধজাহাজ আমদানি করা জাহাজের চাইতে অনেক বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন হবে। লার্জ পেট্রোল ক্রাফটগুলোতে থাকবে স্বয়ংক্রিয় মিসাইলসহ অত্যাধুনিক সব যুদ্ধাস্ত্র। এই যুদ্ধজাহাজগুলো শত্রুপক্ষের সাবমেরিন সনাক্ত এবং তার ওপর আক্রমণ করতে সক্ষম। এটি দিয়ে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় টহলও দেয়া যাবে। তিনি বলেন, যুদ্ধ জাহাজের প্লেট, ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে। শিপইয়ার্ডের ২৫০ জন শ্রমিক ও প্রকৌশলী জাহাজ নির্মাণ কাজে অংশ নিচ্ছেন।