কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানে চাকরি ‘শুধু আগ্রহটা থাকতে হবে’ :

তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (৪ সেপ্টেম্বর):  বাড়ছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কম্পিউটার যন্ত্রাংশ ও সহায়ক নানা যন্ত্রের চাহিদা। দেশে কম্পিউটার পণ্যের বাজার এখন বেশ বড়। এ ব্যবসায় নামছে নতুন অনেক প্রতিষ্ঠান, পুরোনোরাও বাড়াচ্ছে কাজের পরিধি ও কার্যক্রম। তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র।

কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন এ কর্মক্ষেত্রে তরুণদের আগ্রহই বেশি। যোগ্যতা ও পছন্দের হিসাবে ব্যতিক্রম ও ভিন্নধর্মী এসব কাজের প্রতি তরুণেরা ঝুঁকছেন। কাজের ধরন অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে যোগ্য লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। শিক্ষানবিশ হিসেবেও কাজের সুযোগ রয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যুক্ত হচ্ছেন তথ্যপ্রযুক্তির এই ব্যবসা খাতে।

গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে সব মিলিয়ে প্রায় ৫৫০ জন লোক কাজ করছেন। আরও লোক নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের কর্মক্ষেত্র যথেষ্ট নারীবান্ধব। এখানে এক-চতুর্থাংশ নারী কর্মী আছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত ডিগ্রির পাশাপাশি অভিজ্ঞ লোক খুঁজি।’
মহাব্যবস্থাপক, উপমহাব্যবস্থাপক, সহকারী মহাব্যবস্থাপক, ব্যবস্থাপক, উপব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক, পণ্য ব্যবস্থাপক, পরিবহন ব্যবস্থাপনা, বিপণন ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ, বিক্রয়, পণ্যসেবা ব্যবস্থাপনা, অফিস সহকারী ও কারিগরিসহ নানা পদে কাজের ব্যবস্থা আছে এখানে। এ কাজে যোগ্যতা হিসেবে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি প্রয়োজন পড়বে বিষয়ভিত্তিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। যাঁরা বিবিএ, এমবিএ, কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল-ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ার্স বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন, তাঁরা এসব কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরাও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিভিন্ন পদে কাজের সুযোগ পান। তবে অফিস সহকারী ও পরিবহন ব্যবস্থাপনার কাজে অভিজ্ঞতাটাই বেশি জরুরি। পাশাপাশি যোগ্যতা (আলোচনা সাপেক্ষ) হিসেবে লাগবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাসের সনদপত্র।
কম্পিউটার সোর্সের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবসা ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য বিক্রয় ও ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেলস খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে দক্ষ, কর্মঠ ও নিবেদিত লোকের প্রয়োজন পড়ে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগের কর্মীকেই পরিশ্রমী হতে হয়। নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে দক্ষতা অনুযায়ী ভালো অবস্থানে যাওয়া এখন খুবই সহজ। ভিন্নধর্মী কাজের পরিবেশ পাওয়ায় তরুণেরা এসব কাজে বেশ চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন।’
প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী নিয়োগের পর তাঁদের দক্ষতা বাড়াতে দেশ-বিদেশে নানা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। অভিজ্ঞতা না থাকলেও সেলসের কাজে যুক্ত হওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে এসব কাজের মাধ্যমে। পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে থাকবে বিদেশ ভ্রমণের সুযোগও আর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে পারবেন মানবসম্পদ, পণ্য ব্যবস্থাপনা, করপোরেট সেলস, বিক্রয়োত্তর ও পণ্য সেবা, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের সব ক্ষেত্রে। যোগ্যতার ভিত্তিতে পাবেন আকর্ষণীয় বেতন। নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত অন্যান্য ভাতাও পাবেন এসব কাজে। কর্মকালে পদোন্নতি ও বিশেষ ছুটির ব্যবস্থাও আছে এসব ক্ষেত্রে।
রায়ানস কম্পিউটারস প্রকৌশলী ও সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমাদের কাজের পরিবেশ যথেষ্ট ভালো। আমাদের কর্মীরা মানসিকভাবেও সন্তুষ্ট। এখানকার সবাই শৃঙ্খলাবদ্ধ। কারও ওপরেই অতিরিক্ত কোনো চাপ থাকে না। ফলে সবাই-ই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন। আমাদের বেতন কাঠামোও অনেক আধুনিক। মানসম্মত জীবন চালাতে যেমন প্রয়োজন, তেমনই।’
কাজে আগ্রহী নতুনদের জন্য তিনি বললেন, ‘অভিজ্ঞতা থাকুক বা না থাকুক-যে কেউ-ই আমাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন। শুধু আগ্রহটা থাকতে হবে। আমরাই তাঁদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার উপযোগী করে গড়ে তুলব।’
প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, সব সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই লোক নেওয়া হয়। পদ শূন্য হলে কিংবা নতুন কোনো প্রকল্প শুরু করলে চলে নিয়োগ কার্যক্রম। নিয়োগগুলো পাওয়া যাবে চাকরিবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইট, প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট, পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ