স্মৃতিসৌধে পুলিশের চাঁদাবাজি
সাভার রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের সাধারণ দর্শনার্থীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। তারা প্রায়ই ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিচ্ছে বলে দর্শনার্থীরা জানিয়েছে।
চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দেয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ।
শনিবারও এধরনের একটি ঘটেছে, যার ভুক্তভোগী টঙ্গীর ফিরোজ মিয়া। স্ত্রীকে নিয়ে স্মৃতিসৌধ দেখতে আসেন তিনি।
ফিরোজের অভিযোগ, ঘোরাফেরার একপর্যায়ে স্মৃতিসৌধ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ওয়ালী রহমান ও কনস্টেবল রফিকুল, মোহাম্মদ আলী, মেহেদী ও কিবরিয়াসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্যরা তাদেরকে ধরে সৌধের ভেতরে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
পুলিশ সদস্যরা নগদ সাড়ে তিন হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিয়ে তাদের স্মৃতিসৌধের মূল ফটকের বাইরে বের দেয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ফিরোজ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “ওই পুলিশ সদস্যরা অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে আমাদের পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেয়ার পরও তারা ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে জোরপূর্বক আমার কাছে থাকা নগদ সাড়ে তিন হাজার টাকাসহ আমাদের দুজনের দুটি মোবাইল নিয়ে স্মৃতিসৌধ এলাকা থেকে বের করে দেয় তারা।”
এর আগেও এধরনের বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে, যার একটিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
সম্প্রতি ধামরাইয়ের ইসলামপুর এলাকার রাকিব হাসান সস্ত্রীক স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে গেলে ওই পুলিশ সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে ক্যাম্পে আটকে রাখে। পরে রাকিবের কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
তবে ওয়ালী রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “এর আগে এরকম ঘটনা ঘটতো শুনেছি। তবে আমি আসার পর আর এসব কিছু হয় না।”
জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জকি এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “স্মৃতিসৌধের ভেতরে বিভিন্ন দর্শনার্থীর কাছ থেকে পুলিশের টাকা আদায়ের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এর আগেও একাধিকবার এধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জানানো হলেও কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
তিনি আরো জানান, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সম্প্রতি ক্যাম্পের হাবিলদার হোসেন আলীকে প্রত্যাহার করা হলেও এধরনের ঘটনা থামেনি।
এব্যাপারে ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার রাসেল শেখ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন জানান, “স্মৃতিসৌধের ভেতরে এক দর্শনার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ শুনে শনিবার পুলিশ পাঠানো হয়েছিল কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি।”
তিনি বলেন, “কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে ওই ক্যাম্পের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”