দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ: ইনু
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,ঢাকা(৮ অক্টোবর): দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি -জামায়াতের মদদে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণ ফোনের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, সাইবার অপরাধ কমানোর পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থা করতে গ্রামীণফোন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণফোন সাইবার অপরাধ দমনে তাদের নেটওয়ার্কে ফিল্টার বসিয়েছে। শিশুরা যাতে ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের মাধ্যমে কোনো অনভিপ্রেত কিছু দেখতে না পারে এবং ডাউন-লোড না করতে পারে সে লক্ষে এ ফিল্টার বসানো হয়।
এছাড়া ক্ষতিকারক বিকিরণ ঠেকাতে সারা দেশে গ্রামীণ ফোনের টাওয়ারে শিগগিরই নতুন একটি ডিভাইজ স্থাপন করবে তারা।সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বিএনপি-জামায়াত ছাড়া এই ধরনের চক্রান্ত অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করে না। নিকট অতীতে তারা ভয়াবহ সন্ত্রাসের জন্ম দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত অন্তর্ঘাতমূলক অপরাধকে তারা অস্বীকার করেনি।”
“বরং খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন, নিজামী মন্ত্রী ছিলেন, যখন বাংলা ভাই, আব্দুর রহমানের তাণ্ডব চলছিল, তখন বিএনপি বলেছিল, এগুলো মিডিয়ার সৃষ্টি। তখনই মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদী তৎপরতাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। আজকেও একই ধরনের ঘটনা দেখতে পাচ্ছি।”
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার গুলশানে ইতালীয় এনজিওকর্মী চেজারে তাভেল্লা ৩ অক্টোবর রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি খুন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেইসবুক পাতায় দুই বিদেশি হত্যায় বিএনপি-জামায়াতের জড়িত থাকার বিষয়ে ‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ তথ্য থাকার কথা বলেন।
অবশ্য বিএনপি শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে আসছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলনে পুড়িয়ে ‘মানুষ হত্যার’ প্রসঙ্গ টেনে ইনু বলেন, “আগুন সন্ত্রাসে ৬০০ জনের বেশি মানুষ হাতেনাতে ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে ১০-১২ জন ছাড়া বাকি প্রায় সবাই বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। সুতরাং এটা এড়ানোর কোনো উপায় নেই। এই আগুন যুদ্ধ-জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসে তাদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে।
“এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারিনি। যার কারণে এখনো ছিঁটেফোটা আক্রমণ হচ্ছে। এই আক্রমণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা, নাকি গভীর ষড়যন্ত্রের ফল, নাকি বিএনপি জঙ্গিবাদী চক্রের আরেকটা নতুন পন্থা- সব কিছু আমরা খতিয়ে দেখছি।”
দেশে জঙ্গিবাদ নেই- বিএনপির এমন দাবিকে ‘ডাহা মিথ্যা’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এই কথার মধ্য দিয়ে আসলে তারা জঙ্গিবাদকে আড়াল করার চেষ্টা করছে, খুনিদের রক্ষার চেষ্টা করছে এবং নিজেদের আগুন যুদ্ধের মামলার বিচার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
“আমার এতে মনে হচ্ছে, খালেদা জিয়া ও তার মিত্ররা ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে জঙ্গিবাদকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। একই কৌশল তারা এখনো গ্রহণ করেছেন। তথ্য বলছে, প্রত্যেকটা খুনি, যারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তারা হয় জেএমবি, নয় জামায়াত, নয় বিএনপি।”