বোমা হামলার ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয় : রবার্ট গিবসন
সাইফুর রহমান, সিনিয়ার রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা: পুরান ঢাকায় শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের প্রস্ততিকালে বোমা হামলার ঘটনায় পৃথক তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত।
শনিবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট ঢাকাস্থ দূতাবাসের ফেসবুকে এক বার্তায় শিয়াদের ওপর বোমা হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যায়িত করেছেন। তিনি এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বোমা হামলায় নিহত ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বার্নিকাট বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘জটিল’ আখ্যায়িত করে বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের পাশে যুক্তরাষ্ট্রের থাকার অঙ্গীকারও করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনও তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
রবার্ট গিবসন শনিবার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘তাজিয়া মিছিলে কাপুরুষোচিত হামলা হয়েছে। এই ধরনের হামলা ও অসহিষ্ণুতা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি নিহত ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
টুইটারে তিনি লিখেছেন, আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের শোভাযাত্রায় এ হামলার ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। এ ধরনের সহিংসতা ও অসহিষ্ণুতা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে হোসনি দালান এলাকায় গভীর রাতে বোমা হামলায় এক কিশোর নিহত হয়েছে। তার নাম সাজ্জাদ হোসেন। আহত হয়েছেন ১০০ জনের বেশি। এদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতালে ও ১৬ জন মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আসেন নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এদের অধিকাংশই শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইনের (রা.) শহীদ হওয়ার দিনকে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করে থাকে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রাত দেড়টা থেকে হোসনি দালানের মূল ফটকে একটি তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। মিছিলটি পল্টনে যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন তরুণ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। এর মধ্যেই রাত পৌনে দুইটার দিকে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কারও কারও মতে, পরপর ১০-১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কেউবা দৌড় দিতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পায়ের তলায় পড়েছেন। কান্না-চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারেন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান, লেগুনায় করে আহতদের ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর হোসনি দালান এলাকায় অনেক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।