”পাস হবে বিআরটিএ আইন”ওবায়দুল কাদের:
বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি,ঢাকা(২৫ অক্টোবর): মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোট অথরিটি (বিআরটিএ) আইন সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পাস করা হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তার আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের সুপারিশ এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এজন্য আগামী সাতদিনের মধ্যে সুপারিশমালা দিতে অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
রোববার (২৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক-ইন সেন্টারে ‘সড়ক নিরাপত্তায় আইন প্রণয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে সংশ্লিষ্টদের সুপারিশ দিতে আহবান জানান মন্ত্রী। সেমিনারের আয়োজক ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি ‘অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ’।
মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভায় বিআরটিএ আইন অনুমোদিত হলেও এখনও সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। তবে তা দ্রুত দিতে হবে। শীতকালীন অধিবেশনের আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ পরামর্শগুলো যোগ করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি সেতুমন্ত্রীকে আইনটিতে সংশ্লিষ্ট সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সুপারিশমালা যোগ করার আহবান জানালে মন্ত্রী তাতে সাড়া দেন।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বিআরটিএ আইনের সুপারিশমালা আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দেবেন। আর রোড টান্সপোট অথরিটি (আরটিএ) আইনের সুপারিশমালা আগামী নভেম্বরের শেষের দিকে মন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে আইন তৈরি হয়, কিন্তু প্রয়োগ হয় না। আবার অনেক আইন প্রণেতারা আইন মানেনও না। এটা কখনো কখনো ঘটছে তা নয়, বরং প্রতিনিয়ত ঘটে।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রাস্তায় রং সাইডে চলেন অভিযোগ তুলে মন্ত্রী বলেন, অসহায় দৃষ্টিতে আমি তখন তাকিয়ে থাকি। জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে, আগে রাইট সাইডে যাবার ব্যবস্থা করে দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা কি ধরনের উত্তর? এটা তো কোনো সমাধান নয়। যানজট আছে আর আপনি সেটা আরও কঠিন করছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাকেও প্রচণ্ড ট্রাফিক জ্যাম অতিক্রম করে অফিস করতে হয়। আমি তো কখনও রংসাইডে যাই না।
গত ঈদের একটি অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে যানজট দুর্ভোগ শেয়ার করে বাইপাইল থেকে চন্দ্রায় পৌনে চার ঘণ্টায় গিয়েছি। অথচ পুলিশ আমাকে বলেছিলো, রং সাইড দিয়ে গেলে মাত্র পনেরো মিনিটে যেতে পারবেন। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি।
মন্ত্রী বলেন, চার ঘণ্টা রাস্তায় যানজট সহ্য করে যাওয়া কোনো লোক দেখানো নয়।
মন্ত্রী বলেন, কিভাবে আপনি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করবেন? যেখানে যানজট জলজট জনজট সব মিলেমিশে একাকার।
আক্ষেপ করে মন্ত্রী আরও বলেন, নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক চার লেন করলাম। কিন্তু সেই চার লেনের অর্ধেকও এখন নেই। দখলমুক্ত করি, আবার দখলে চলে যায়।
অনেক সময় ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো রাস্তা অচল করে দেয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেখা যায়, কোনো কোনো গাড়ির চালক গাড়ি থামিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। আবার তাকেও খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না- এটা কি করে থামাবেন?
মন্ত্রী বলেন, রাস্তার প্রকৌশলগত ত্রুটি দূর করা যাবে। কিন্তু এসব কিভাবে ঠিক করবেন?
জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে দশ লেন রাস্তা আছে। কিন্তু মাত্র চার লেন ব্যবহার করা হয়। যে যার মতো ফ্রিস্টাইলে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
মন্ত্রী জানান, আরিচা সড়কে ২৫ কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা ঠিক করা হয়েছে। এ কারণে সেখানে ৯৮ শতাংশ দুর্ঘটনা কমে এসেছে।
মন্ত্রী আরও জানান, দুর্ঘটনাপ্রবণ ১৪৪টি বাঁক সংশোধনের কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। ১৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের এ কাজের বাকি অর্ধেক শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রাস্তার প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ১৫০ কিলোমিটার সড়কটির আজিজনগর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অত্যন্ত চমৎকার সড়ক।
আর আজিজনগর থেকে পুঠিয়া পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়কের ২৪টি পয়েন্ট খুব খারাপ। বর্ষায় এগুলো পুরোপুরি পানির নিচে চলে যাওয়ায় এ বেহাল অবস্থা হয়েছে।