”সীমিত আকারে পায়রা সমুদ্রবন্দর চালু হবে” পরিকল্পনামন্ত্রীঃ

মনির হোসেন,বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,  ঢাকা: রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার ২৯ অক্টোবর একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ন্যূনতম অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সীমিত আকারে পায়রা সমুদ্রবন্দর চালু করতে চায় সরকার। এজন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। এটি ছাড়াও আরো সাতটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।  বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আটটি প্রকল্পে মোট ছয় হাজার ৩৮৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন চার হাজার ১৯৭ কোটি ৫৮ লাখ, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ২৫ কোটি এবং প্রকল্প সহায়তা থেকে দুই হাজার ১৪৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সীমিত আকারে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এক হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদি উন্নয়ন’ নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্প সম্পর্কে মুস্তফা কামাল বলেন, পায়রা দেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর। এর অবস্থান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পায়রা বন্দরের মাধ্যমে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উন্নয়ন হবে। এ কারণে প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে বন্দরের অবকাঠামো সুবিধা সৃষ্টি করা হলে এটি দেশের অভ্যন্তরে এবং উপ-আঞ্চলিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ১৬ একর জায়গার ওপর সীমিত ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা, যেমন—পন্টুন, ক্রেইন, নিরাপত্তা ভবন, অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ অন্যান্য উন্নয়নের মাধ্যমে একটি বন্দর টার্মিনাল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পণ্য ওঠানো-নামানো বা খালাস করা হচ্ছে না। তবে পূর্ণাঙ্গ পায়রা বন্দর ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা পর্যন্ত বহির্নোঙরে বাণিজ্যিক জাহাজের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। এ কারণে বন্দরটি পূর্ণ উদ্যমে চালুকরণ এবং আমদানি-রপ্তানি পণ্যের অবাধ পরিবহনের লক্ষ্যে একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি ওয়্যারহাউস (গুদামঘর) নির্মাণসহ পাইলট বোট, টাগ, বয়া লেইয়িং ভ্যাসেল, সার্ভে বোট এবং নিরাপত্তা যন্ত্রসামগ্রী সংগ্রহ করা জরুরি। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো : ‘চট্টগ্রাম ও খুলনায় বিএসটিআইর অঞ্চলিক অফিস স্থাপন ও আধুনিকীকরণ’ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ ধরা হয়েছে।

৪৬৮ কোটি নয় লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

‘ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

১০৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে ‘পরিকল্পনা বিভাগ/কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন নির্মাণ’ করা হবে।

৪৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকাস্থ মিরপুর পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬০৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক কমিটি।

‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিপ মডেল পেস্টিং সেন্টার স্থাপন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

সংশোধিত প্রকল্পটি হচ্ছে ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’। এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ