বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ:
আদেশে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা সংশোধন করে গেজেট জারির দিন থেকে, অর্থাৎ গত ২২ অক্টোবর থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। ২২ অক্টোবরের আগে গৃহীত নিয়োগ কার্যক্রম (পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া গ্রহণ) আগের নিয়মেই সম্পন্ন করা যাবে। কিন্তু কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি ২২ অক্টোবর বা এর পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করে থাকে, তাহলে তা অবৈধ হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরে এক কর্মকর্তা জানান, এখন থেকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে মেধাতালিকা করে দেবে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এই মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। এ জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। এ জন্য কিছু পদ্ধতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। এ কারণেই নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন পদ্ধতি নিয়ে শিগগির একটি পরিপত্র জারি করা হবে।
তবে যাঁরা ২২ অক্টোবরের আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ইতিমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন, এমপিওভুক্তির (বেতন ভাতার সরকারি অংশ পাওয়া) ক্ষেত্রে তাঁদের কোনো সমস্যা হবে না। তাঁরা আগের নিয়মেই এমপিওভুক্ত হবেন।
বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে গত এক বছর ধরে আলোচনা চলছিল। পরে নতুন এ নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা সংশোধন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২২ অক্টোবরের তারিখে সই করা বিধিমালাটি ৪ নভেম্বর বিধিমালাটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
নতুন এই পদ্ধতির ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি একচ্ছত্র ক্ষমতা হারাল। বর্তমান পদ্ধতিতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে নিবন্ধন পরীক্ষা হলেও নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিচালনা কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। পরিচালনা কমিটি তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিলে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করেন। পরে পরিচালনা কমিটির অধীনেই স্থানীয়ভাবে নিয়োগ কমিটি গঠন করে আবেদনকারীদের নিয়োগ করা হয়। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি, আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রায়ই উঠছে।
নতুন নিয়মে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রতিবছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে ওই জেলার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পদ ও বিষয়ভিত্তিক শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করবে। এই তালিকার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথমে একটি বাছাই (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষা হবে। এরপর ঐচ্ছিক বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপজেলা, জেলা ও জাতীয়ভিত্তিক মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।
এই মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। কোনো প্রার্থী লিখিত ও মৌখিক উভয় ক্ষেত্রে পৃথকভাবে শতকরা ৪০ নম্বর না পেলে তিনি মেধাতালিকায় স্থান পাবেন না। মেধাভিত্তিক মূল তালিকা ছাড়াও শূন্য পদের ২০ ভাগ প্রার্থীর সমন্বয়ে অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রকাশ করা হবে। মৃত্যু ঘটলে, চাকরি ছাড়লে বা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে, এই তালিকা থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে।