আজও তিনি(খালেদা জিয়া) তাদের সঙ্গে সন্ধি করছেনঃ ইনু
বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা : সচিবালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “দেশে আসাতে (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) কোনো বাধা দেব না, স্বাগত জানাব। কারণ বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে আসাই বাঞ্ছনীয়।”
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ‘সন্ত্রাস, নাশকতাসহ বিভিন্ন জঙ্গি কর্মকাণ্ডে’ জড়িত রয়েছেন- তথ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা জানতে চান- তারা দেশে ফিরলে সরকার বাধা দেবে কি না।
ইনু বলেন, “স্বামীর মতোই খালেদা জিয়া জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, যুদ্ধাপরাধী এবং জামায়াতের সঙ্গে রাজনৈতিক সন্ধি স্থাপনের অভ্যাস ছাড়তে পারেননি। এ কারণে আজও তিনি তাদের সঙ্গে সন্ধি করছেন।
“ওই সন্ধির কারণে বাংলাদেশে পরিকিল্পিত হত্যা, খুন, নাশকতা এবং সর্বশেষ আগুন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়ে এই মুহূর্তে একজন সন্ত্রাসী নেত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া রাজনৈতিক আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।”
কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত সাত বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গত সেপ্টেম্বর ২০১৫-তে চিকিৎসার কথা বলে লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়াও ছেলের সথেই আছেন।
বর্তমানে সেখান থেকেই এক বিবৃতিতে বেগম জিয়া আশা করেন, “সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে।”
এরপর গত ৭ নভেম্বর সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠনের ঐক্যের আহ্বান জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
মওদুদের বক্তব্যের জবাব দিতেই সোমবার তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
তিনি বলেন, “আমরা খুনিদের ফর্মুলা গ্রহণ করতে পারি না। মওদুদের ঐক্যের প্রস্তাব বিড়াল তপস্বীর মত। খুনীদের সঙ্গে ঐক্যের প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করছি।
“বিএনপির সঙ্গে জঙ্গীবাদ, উগ্রবাদ এবং যুদ্ধাপরাধীর সন্ধিকে হালাল করতে চাইছেন। ঐক্য বা জাতীয় ঐক্যের নামে সন্ত্রাসবাদকে আড়াল করার অপচেষ্টা সফল হবে না।”
অপকর্ম ‘আড়াল করে’ রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টার ‘নীল নকশার’ অংশ হিসেবে খালেদা জিয়া তার দলের আরেক নেতাকে দিয়ে এই ঐক্যের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন জাসদ সভাপতি ইনু।
তিনি বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অবস্থান নিয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।
“প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। যারা নাশকতা করে, তাদের আইনের আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অনেকে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে।”
বিএনপি সত্যিই সন্ত্রাসী দল হয়ে থাকলে রাজনৈতিকভাবে তাদের নিষিদ্ধ করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “খালেদা জিয়া সাম্প্রতিককালে বিএনপিকে সন্ত্রাসী দলে পরিণত করছেন। আইনগত বিষয়গুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছি। মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আগুন সন্ত্রাসী থাকবে না।”
অন্যদের মধ্যে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহাম্মদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।