দেশে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়ঃ ড. গওহর রিজভী

মনির হোসেন, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা: দেশে বর্তমানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। ফলে তিনি এ দাবিও করছেন যে, বর্তমানে এদেশে ব্যবসা করার জন্য উৎকৃষ্ট সময়।  রিজভী বলেছেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের (বিওআই) সঙ্গে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন একীভূত করে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার চিন্তা করছে সরকার। এ কর্তৃপক্ষ দেশে বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে সম্ভাবনা-সমস্যাগুলো নিয়ে পর্যলোচনা ও গবেষণা করবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করবে।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) হল রুমে ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ইন বাংলাদেশ: লুকিং অ্যাহেড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গওহর রিজভী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ইতিবাচক প্রচারণা চালাতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গওহর রিজভী বলেন, আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে, যেকোন বিষয়কে নেতিবাচকভাবে দেখি। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনায় থেকে প্রচারণা চালাতে হবে। কারণ, বর্তমানে এদেশে ব্যবসা করার জন্য উৎকৃষ্ট সময়। বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো।

তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক দেশের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। তাই ভারতের সঙ্গে আমাদের যৌথভাবে ব্যবসা করতে হবে। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বর্তমানে আমাদের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি বিনিয়োগ ছাড়া আমরা কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আনতে পারবো না।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিনিয়োগ বোর্ডের সদস্য নাবাস চন্দ্র মণ্ডল। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সুখী-সম্পদশালী দেশ হতে হলে ২০১৭ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং এটা ২০২১ সাল পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। এছাড়া ১৫ শতাংশ দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে হবে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ২০ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেশে কম খরচে দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে। চীন এবং ভারতের সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার কারণে আন্তর্জাতিক সুবিধা পাচ্ছে। স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ গ্যাস পাচ্ছে। রপ্তানি ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ট্যাক্স হলিডে ডিউটি ও কোটা সুবিধা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আমরা ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশিদের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এসএমই খাতসহ ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ব্যাংক লোন কমে এসেছে। এসবের ফলে বিগত অর্থবছরে অর্থাৎ ২০১৪ সালে বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০৫৮ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আগামীতে এসব সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডিসিসিআইয়ের সভাপতি হোসেন খালেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের কান্ট্রি চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আবরার এ আনোয়ার, জিই ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি লিডার শ্রীনাথ ভেনকাথেস, আইএফসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ