আমার জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকাঃ মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নিজেকে জনগণের সেবক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি নিজেকে জনগণের সেবক মনে করি।
এ সময় তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনকে জনগণের ভবন হিসেবে উল্লেখ করেন।
গণভবনে বড় দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি এদেশের মানুষের কল্যাণ করতে। ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের ভাগ্য গড়ার মানসিকতা আমাদের ছিল না। মানুষের সেবাই আমার লক্ষ্য। এটাই করার চেষ্টা করেছি এবং করে যাচ্ছি সব সময়।
কোনো বাধাই কাজের গতিকে কমাতে পারবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক বাধা আছে। মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে বাধা-বিঘ্ন আসবে। তবে কোনো বাধাই কাজের গতিকে কমাতে পারবে না। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো সাময়িক পদ। তবে হ্যাঁ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের জন্য বেশি কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছি সেটিকে কাজে লাগিয়ে কাজ করে গেছি এদেশের মানুষের জন্য।
তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা বোনো ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেয়েছি। আমরা এই দেশটাকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই। আমার বিশ্বাস আমরা এটি করতে পারবো।
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এই মাতৃভূমিকে এমনভাবে গড়ে তুলি যেন বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়।
নিজেদের অর্থায়নে সেতুর কাজ শুরুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু নিয়ে আমাদের অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা অপবাদ নেবো কেন? নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ শুরু করেছি, অসাধ্যকে সাধন করেছি। এতে দেশের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ফিরে এসেছে, আমরাও পারি।
অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যের ধর্মকে শ্রদ্ধা জানাতে না পারলে, নিজের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন কী করে?
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এদেশের মাটি সবার জন্য। এখানে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা এই চেতনায় বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবেন এটাই অমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। তাছাড়া সব ধর্মই মানবতার কথা বলে।
২০০১ পরবর্তী বিএনপি আমলের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াতের ক্ষমতায় আসার পর সব ধর্মের মানুষের ওপর আঘাত করা হয়েছে। কোনো ধর্মের মানুষ রেহাই পায়নি। তাদের বর্বরতা দেখে মনে হয়েছে একাত্তরের হানাদার বাহিনী বর্বরতা শুরু করেছে।
‘বিএনপি-জামায়াত যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু হয়ে যায়’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ক্রিকেট খেলায় সেঞ্চুরি করলে সবাই খুশি হয়। কিন্তু আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সেঞ্চুরি করেছি। ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যাবো। সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতি ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালাবো। আজকে প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন। ২০২১ সালে ঘরে ঘরে আলো জ্বালবে।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন, খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গুরু পেট্রিক ডি রোজারিও ও মহাসচিব নির্মল রোজারিও প্রমুখ।
পরে বড় দিন উপলক্ষে কেক কাটেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।