‘আওয়ামী লীগ যেন তাদের শত্রু’
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি দৈনিক পত্রিকা এবং এই প্রত্রিকার দুজন সম্পাদকদের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘গোটা ২০টা বছর আমার রাজনীতির জীবনে এই পত্রিকাগুলো শুধু আমার বিরুদ্ধে কুৎসাই রটনা করে গেছে, আমার বিরুদ্ধে লিখে গেছে। আওয়ামী লীগ যেন তাদের শত্রু।’
২২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মাতৃভাষা দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে আমরা আর ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। আমাদের সমস্ত অর্জন একে একে নস্যাৎ করা হলো। সে-ই ২০০১-এর অত্যাচার-নির্যাতনের কাহিনি, যেখানে ছয় বছরের রাজুফা গ্যাংর্যাপের স্বীকার হয়েছিল। রাজুফা থেকে বয়োবৃদ্ধ-কেউই রেহাই পায়নি। একাত্তরে যেভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছিল, ওই সময় একইভাবে সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলেছে। তখন দু-একটি পত্রিকা হয়তো এ ঘটনা তুলে ধরেছে। অনেক পত্রিকাই বিএনপি-জামায়াতের ওই সব অত্যাচারের কথা লেখেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাদের নির্বাচন দেওয়ার কথা, তারা বেশ গেড়েই বসে গেল। তখন আমরা কী দেখলাম? রাজত্ব চালাচ্ছে কে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে। ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন, এরা যাদের আপনজন, সেটা বিএনপিরই আপনজন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে চাকরি করত ফখরুদ্দীন, খালেদা জিয়া তাঁকে এনে গভর্নর বানাল। নয়জন সেনা অফিসারকে ডিঙিয়ে মঈন উদ্দিনকে সেনাপ্রধান বানায়। যখন তারা ক্ষমতায় বসল, ততক্ষণে তাদের ভিন্ন রূপ দেখা দিল। ক্ষমতা কীভাবে পাকাপোক্ত করা যায়। আর এই ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য দুটি পত্রিকা আবার ওঠে পড়ে লেগে গেল তাদের সাথে। এবং এই পত্রিকায়, আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন, একজন সম্পাদক স্বীকার করেছেন, তিনি যা লিখতেন…ডিজিএফআই যা দিত, তা-ই লিখে দিতেন। ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সরকারের আমলে ডিজিএফআই খুব শক্তিশালী হয়ে গিয়েছিল।’
ডেইলি স্টারের সম্পাদকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি বুকের পাটা থাকে, সাহস থাকে জাতির কাছে স্বীকার করেন, ভয়ে লিখেছেন। তাহলে আর নির্ভীক সাংবাদিকতা থাকে না। আর যদি তাদের কাছে বিক্রি হয়ে থাকেন বা তাদের সাথে সখ্যতা থাকে সেখানে আমার কিছু বলার নেই। আর যদি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকেন, তাহলে ষড়যন্ত্রকারীদের যারা এ দেশের গণতন্ত্র হত্যা করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার চেষ্টা করেছিল, এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, এ দেশের মানুষকে এভাবে নির্যাতনের শিকার করেছিল—যুদ্ধাপরাধীদের যেমন বিচার হচ্ছে ঠিক সেভাবেই একদিন এদের এই সংবিধান ধ্বংস করার বিচার হবে।’