শততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন, নইলে ছেড়ে দিন
সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সড়ক ও জনপথ বিভাগে কর্মরত প্রকৌশলীদের প্রতি দেশের কল্যানে সড়ক নির্মান এবং সংস্কারে শততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, নইলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে সড়ক ও জনপথের উন্নয়ন, সংস্কারের অগ্রগতি এবং সড়ক পথে চলাচল নির্বিগ্ন করতে আয়োজিত আন্ত মন্ত্রনালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
যোগাযোগ মন্ত্রী সারা সড়ক ও জনপথ বিভাগে কর্মরত প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা লোভ-লালসা পরিহার করুন। দেশের জন্য, দেশের মানুষের কাজ করুন। দেশের মানুষের আমাদের প্রতি যে প্রত্যাশা তা পূরণ করুন। নইলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।
প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি কাকে বিশ্বাস করবো? প্রকৌশলীরা সত্য তথ্য প্রদান করেন না। তারা যে রিপোর্ট দেন বাস্তবে গিয়ে দেখা যায় অন্য রকম। কেন তারা মিথ্যে তথ্য দেন? আমি বুঝি না। তাদের আসলে কতো টাকা দরকার? দরপত্র অনুমোদনের পর কার্যাদেশ দিতে এত দেরী হয় কেন? তারা এমন ভাবে কাজ করেন যেটা এক পশলা বৃষ্টি হলেই নষ্ট হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে বলছি না। সবাই নিম্নমানের কাজ করেন তা না। সবাই যদি নিম্নমানের কাজ করতো তাহলে পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতি হতো না। কেউ কেউ ভাল কাজ করলেও অনেকেই তা করেন না।’
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি আসলে সত্যটা প্রকাশ করলাম। যেটা হয়তো অনেকে করে না। আমি করলাম, কারণ আমি কারো কাছ থেকে এক পয়সা কমিশন খাই না।’
‘দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না’ জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু দেখা যায়, একজনকে সরিয়ে আরেকজনকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। যেহেতু জনবলের অভাব রয়েছে, তাই ঘুরেফিরে তাদের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। এটা কোনো দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়।’
‘নিম্নমানের কাজের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকার দলীয় ঠিকাদাররা জড়িত’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘তার দায়িত্ব গ্রহণের পর দরপত্র নিয়ে কোনো মারামারি হয়নি।’
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সড়ক-মহা সড়কের যে অবস্থা সেটা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভালো। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজ দশটি প্যাকেজের মধ্যে ছয়টি প্যাকেজে স্পট ও কার্পেটিং-এর কাজ চলছে। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বিকল্প সড়ক ও বিদ্যমান সড়কগুলো যাতে সচল থাকে সেদিকে।
এছাড়া গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ি সড়কে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কারণে দীর্ঘ যানজটের উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা আসলে সিটি কর্পোরেশনের প্রকল্প। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নয়। কিন্তু সবাই মনে করে এটা আমাদের। আর যেহেতু যানজটের বিষয় আছে, তাই এটা আমার জন্য মন্ত্রী হিসেবে বিব্রতকর। এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনকে একাধিকবার বলা হলেও তাদের নিদ্রা ভাঙ্গছে না।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিআরটিসি বহরে ৮৭টি নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস আনা হয়েছে। খুব শিগগিরিই এগুলো চালু করা হবে। এতে করে আসন্ন রমজান ও ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ কিছুটা কমবে।অন্যদিকে ট্যাক্সিক্যাব আমদানির জন্য মোট ৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে যারা শর্ত পূরণ করেছে তাদের এ মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে ট্যাক্সিক্যাব আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে । বলে জানান তিনি।