শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ঘুরে দাড়াল বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : টি২০ এশিয়া কাপের পঞ্চম ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দাপট দেখিয়ে এ আসরের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আজকের জয়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াল।
আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৪৭ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। জবাবে পেস ও স্পিনারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কাকে ২৩ রানে হারায় বাংলাদেশ। বোলারদের দাপটে ১২৪ রানে থেমে যায় এশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেও একটিতে জয় পায়নি বাংলাদেশ। ৪ ম্যাচের মধ্যে ২টি খেলেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, ২০০৭ ও ২০১২ সালে। বাকি ২টি খেলেছিল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। জয়হীন থাকা বাংলাদেশ নিজেদের সবচেয়ে পয়মন্ত ভেন্যু মিরপুরে এসে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের স্বাদ পেল।
স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরুতেই লড়াকু বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে দিনেশ চান্দিমালকে ফিরিয়ে দেওয়ার সূবর্ণ সুযোগ তৈরী করেছিল তাসকিন আহমেদ। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপে থাকা সৌম্য ক্যাচটি ছেড়ে দিয়ে যেন ম্যাচটি ফসকে দিলেন! কিন্তু না, সেই সৌম্যর হাত ধরেই সঠিক পথে আসে বাংলাদেশ। সাকিবের প্রথম ওভারের প্রথম বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ উঠিয়ে দেন দিলশান। পিছনে দৌড়ে ড্রাইভ দিয়ে সৌম্য ক্যাচ তালুবন্দি করতে ক্রিকেট প্রেমিদের উচ্ছ্বাসে ভাসান।
এরপর ১১তম ওভার পর্যন্ত চলে লঙ্কানদের দাপট। শূন্য রানে জীবন পাওয়া দিনেশ চান্দিমাল ও সিহান জয়াসুরিয়া ৭৫ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৭৬ রানে এ জুটি ভাঙেন স্পিনার মাহমুদ উল্লাহ। ডিপ পয়েন্টে চান্দিমালের (৩৭) ক্যাচটি নেন তাসকিন আহমেদ। এরপর শুধু টাইগার গর্জন। সাকিব, মুস্তাফিজ, মাশরাফিদের বোলিং তোপে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি সিংহের দল।
১০.২ ওভারে বাউন্ডারি পাওয়া লঙ্কানদের পরবর্তী বাউন্ডারি পেতে ১৭.৩ ওভার পর্যন্ত। অর্থ্যাৎ ৪২ বলে কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেনি লঙ্কানরা। টি-টোয়েন্টি যুগে বিস্তৃত এ পার্থক্য ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয় তা আরেকবার প্রমাণ পেল। শেষ ওভারে ৩২ রানের প্রয়োজনে ব্যাটিং করে লঙ্কানরা মাত্র ৮ রান করতে সক্ষম হয়। তাতেই জয় নিশ্চিত বাংলাদেশের।
সাব্বিরের ঝোড়ো ইনিংসে টাইগাররা ১৪৮ রানের টার্গেট দিয়েছে শ্রীলংকাকে। শুরুতে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারালেও সাব্বির রুম্মনের দৃড় ব্যাটিংয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৭ রান। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ হারায় ৭টি উইকেট।
ফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে টস জিতে এ ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের দলপতি মাশরাফি। দুই দলের মহাগুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচটি শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
টস জিতে টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ম্যাথুজ এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন মিঠুনকে। প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে মিঠুন ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে কুলাসেকারার বলে ম্যাথুজের হাতে মিডঅফে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। দুই ওপেনার ফেরেন শূন্য রানে।
শুরুতে দুই ওপেনারকে হারালেও দারুণ ব্যাট করতে থাকেন সাব্বির রহমান এবং মুশফিকুর রহিম। তবে, ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৪ রান করা মুশফিক। দলীয় ২৬ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
এরপর ব্যাটে ঝড় তোলেন সাব্বির রহমান। ৫৪ বলে দশটি চার আর তিনটি ছক্কায় তিনি করেন ৮০ রান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে চামিরার বলে জয়সুরিয়ার তালুবন্দি হন তিনি। এর আগে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন সাব্বির। ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাব্বির। সাব্বির-সাকিব স্কোরবোর্ডে আরও ৮২ রান যোগ করেন (৬৭ বলে)।