সাংবাদিকদের বের করে দিয়ে সাত খুনের সাক্ষ্যগ্রহন
আনোয়ার আজমী, বিশেষ প্রতিনিধি, (নারায়নগঞ্জ থেকে) এবিসিনিউজবিডি,
নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সাক্ষ্যগ্রহনের কাজ শুরুর আগে সাংবাদিকদের বের করে দেয়া হয়।
২৯ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সাত খুনের মামলার কারাগারে থাকা ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে সাত খুনের দুটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
সাক্ষ্যগ্রহণ সামনে রেখে সকাল নয়টার দিকে আদালতে প্রধান আসামি সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানাসহ ২৩ জন আসামিকে হাজির করা হয়। প্রথমে তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সকাল সোয়া ১০টার দিকে সেখান থেকে আসামিদের আদালতের কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
আদালতে বিচারক আসন গ্রহণের কিছু আগে রাষ্ট্রপক্ষেও কৌঁসুলি (পিপি) আইনজীবী ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম চলাকালে বাদী, আসামি ও আইনজীবী ছাড়া আর কেউ এজলাসকক্ষে থাকতে পারবেন না বলে আদালতের নির্দেশনা আছে।
প্রধান আসামি নূর হোসেনের আইনজীবী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহাও একই কথা বলেন।
এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের আদালতের এজলাসকক্ষ থেকে বের করে দেয় পুলিশ। এর পর সাংবাদিকরা আদালতের এজলাসকক্ষের বাইরেই অবস্থান করেন।
এ বিষয়ে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য মামলার শুনানিতে সাংবাদিকদের উপস্থিতি কাম্য। কিন্তু আজ যা হয়েছে, তা নজিরবিহীন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এই মামলায় একই আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত তারিখ ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন নূর হোসেন, আরিফ হোসেন ও এম এম রানাসহ ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামি তারেক সাঈদকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত। একই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের তিন দিন পর তাঁদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী হত্যার ঘটনায় একটি এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় ফতুল্লা থথানায় আরেকটি মামলা করা হয়। প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
এরা আগে চাকরিচ্যুত র্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়নগঞ্জের সাবেক ক্যাম্প প্রধন লে. কমান্ডার এম এম রানা সাত খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।