একনেক সভায় ১২ প্রকল্পের আনুমোদন
বিশেষ প্রতিবেদন, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা: অবকাঠামো উন্নয়নসহ ১২টি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬৯৪ কোটি ৫৬ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি এবং ‘এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট’ এর মাধ্যমে নির্মিত মাটির রাস্তার গ্যাপে সেতু কালভার্ট নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা দূর করা হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক হারে সেতু, কালভার্ট নির্মাণে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় প্রকল্পটির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি জাতীয় প্রকল্প। কোনো বিশেষ এলাকার জন্য নয়। যে সব স্থানে নির্বাচন চলবে সে সব স্থানে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে না। নির্বাচনের পরে যাতে কাজ শুরু করা যায় সেভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। তাই নির্বাচনী আইনের সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক নয়।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে দেশে আর কোনো বাঁশের সাঁকো থাকবে না। আমরা এ জন্যই প্রকল্পটি নিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪ জেলার মোট ৪৮৯ উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় প্রয়োজন অনুযায়ী সেতু/কালভার্ট না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যাসহ দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে জনগণ ও গবাদিপশু দ্রুত নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরে সমস্যা সৃষ্টি হয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে মাটির রাস্তার মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৪ মিটার সেতু-কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পটিসহ বৈঠকে মোট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬ হাজার ৬৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ৬৯৪ কোটি ৫৬ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে—উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ১ হাজার ৫৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। বৃহত্তর রাজশাহী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ৩৯৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। চারটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ২৭৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভূলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্প, এর ব্যয় ২৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। জাতীয় মহাসড়ক এন-৮ এর ভূরঘাটা-বরিশাল-লেবুখালী সেতু পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ১০৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। মাদারীপুরে সরকারি অফিসসমূহের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্স স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ২২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। জাতীয় ল্যাবরেটরি মেডিসিন ও রেফারেল সেন্টার স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ১৯৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ১৫১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লালকুঠি মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৪১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে (বরিশাল ও পটুয়াখালী) ব্রিজ বর্ধন খামার স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ২১২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
সুত্রঃ বাসস