মিশরে ব্যাপক সংঘর্ষ, নিহত ২৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ মিশরে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের বিক্ষোভে সেনা সদস্যদের গুলিতে ৩ জন নিহত হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানী কায়রোয় রিপাবলিকান গার্ডের ব্যারাকের বাইরে বিক্ষোভ চলার সময় সেনা সদস্যরা মুরসি সমর্থকদের ওপর গুলি চালায়।এতে পাঁচজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই ব্যারাকেই মুরসিকে আটকে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের দাবি, মুরসিকে আবার পুনর্বহাল করা হোক।
এর ঘণ্টাখানেক পর তাহরির স্কয়ারের কাছে মুরসি সমর্থক এবং তার বিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষের সমর্থকরাই পরস্পরের দিকে বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সেনা সদস্যরা মুরসি সমর্থকদের ধাওয়া করে দূরে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
কিন্তু মুরসিসমর্থকদের বিক্ষোভ কায়রোর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় সংঘাত। আলেকজান্দ্রিয়ায় ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন নিহত ও ২০০ লোক আহন হন।
সিনাই শহরে আলাদা ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হামলাকারীরা মুরসি সমর্থক কিনা তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সেনাবাহিনী শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পর শুক্রবার মুরসির হাজার হাজার সমর্থক কায়রোর শহরতলীর রাবা আল-আদাওয়িয়া মসজিদের বাইরে জড়ো হয় ।তবে ওই সমাবেশকে ঘিরে রাখে সেনাবাহিনী।
এরই মধ্যে ‘সামরিক শাসন নিপাত যাক’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করে মুরসিপন্থীরা। দেশব্যাপী জিহাদেরও ডাক দেয় তারা।গত বুধবার এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন মিশরের ইতিহাসের প্রথম অবাধ নির্বাচনে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। তার সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকেও সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।
মুরসির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগ অবমাননা এবং অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত চলছে।
গত বুধবার সেনাবাহিনী মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। তবে তাকে আটকের কয়েক ঘণ্টা পর আগেই ধারণ করা এক বক্তৃতায় তিনি সমর্থকদেরকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ওদিকে, অন্তবর্তী সরকারের প্রধান আদলি মাহমুদ মনসুর শুক্রবার এক ডিক্রি জারি করে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ বিলুপ্তির ফলে এখন কেবলমাত্র উচ্চকক্ষ (শুরা কাউন্সিল) সক্রিয় থাকল।
এছাড়া গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান রাফাত শেহাতাকে সরিয়ে সেখানে মোহাম্মদ আহমেদ ফারিদকে নিয়োগ দিয়েছেন মনসুর। শেহাতাকে মুরসি নিয়োগ দিয়েছিলেন, মনসুর তাকে বদলি করে নিজের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিলেন।