জাতির জনকের জন্মদিন আজ
নিউজ ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ ১৭ মার্চ। ১৯২০ সালের এই দিনে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশে এই বিশেষ দিনটি ১৯৯৬ সাল থেকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আজ সরকারি ছুটি। দিবসটি উদ্যাপনের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুন। ছোটবেলায় তাঁর ডাকনাম ছিল খোকা। এই খোকাই পরবর্তীকালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন।
কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধু প্রথম কারাগারে যান। ১৯৪৬ সালে বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইসলামিয়া কলেজ (মাওলানা আজাদ কলেজ) থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগ গঠন করা হলে সে সময় কারাগারে থাকা বঙ্গবন্ধু দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পান। ১৯৫৩ সালে বঙ্গবন্ধু দলটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মূলত তাঁর নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা, নির্দেশনায় বাঙালি নিজস্ব জাতিসত্তায় উদ্বেলিত হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের কঠিন পথ পারি দেয় এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার আগেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার জেলা ও উপজেলা সদরে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ডিএফপি ও গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও মহান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সপ্তাহব্যাপী পুস্তক ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপনের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে সারা দেশে বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। যুবলীগ, মহিলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চারুকলা অনুষদ এবং বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পৃথক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, বাদ জোহর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। পরে শিশু সমাবেশ, গ্রন্থমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। ১৮ মার্চ বিকেল ৩টায় রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
৩২ নম্বর বাড়িটি নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ : বঙ্গবন্ধুর ৯৬তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে ‘৩২ নম্বরের বাড়ি ও সুধাসদন : যে ইতিহাস সবার জানা দরকার’ শীর্ষক গ্রন্থ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভিয়েনাপ্রবাসী লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এম নজরুল ইসলামের লেখা বইটির প্রকাশক সুবর্ণ। বইটির ভূমিকায় লন্ডনপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লিখেছেন, ‘সব ঐতিহাসিক স্থান ও ভবন নিয়েই কিছু মিথ তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ি নিয়েও হয়েছে। এই মিথকে ইতিহাসের কষ্টিপাথরে যাচাই করে দেশ-বিদেশের মানুষের অনুসন্ধিৎসা মেটানোর জন্য তুলে ধরা উচিত ছিল। সে কাজটি দীর্ঘদিন ধরে হয়নি।’ ইতিহাসের সেই জরুরি প্রয়োজনটি মিটিয়েছেন এম নজরুল ইসলাম।