বাঁশখালীতে ৩ মামলায় ৬ হাজার আসামি

চট্টগ্রাম ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকা : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে নিহত তিনজনের পরিবার দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আর সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে অন্য মামলাটি দায়ের করেছে পুলিশ।

৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বাঁশখালী থানার ওসি স্বপন কান্তি মজুমদার বলেন, পুলিশের মামলাটির বাদী থানার এসআই বাহার মিয়া। ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলার আজাহারে অজ্ঞাতপরিচয় তিন হাজার দুইশজনকে আসামি করা হয়েছে।

সংঘর্ষে মরতুজা আলী ও আংকুর মিয়া নিহতের ঘটনায় অংকুরের বড়ভাই মৌলভী বশির একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে।

অন্য হত্যা মামলাটি করেছেন নিহত জাকির হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। তার মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত মো. জাকেরের (৫৫) পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি বলে জানান ওসি।

সোমবার বিকালে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা এলাকায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতায় স্থানীয়রা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে চারজন নিহত হন, আহত হন পুলিশসহ কমপক্ষে ১৯ জন।

কয়লাভিত্তিক বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। তবে একটি অংশ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিলে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা সোমবার ‘বসতভিটা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিলে অন্য পক্ষও পাল্টা সমাবেশ ডাকে। উত্তেজনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।

চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি এ কে এম এমরান ভুইয়া বলেন, “দুপুরে ওই এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। পুলিশ চলে আসতে চাইলে রাস্তা অবরোধ করে হামলা চালায় তারা।”

এসময় বিক্ষুব্ধরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায় দাবি করে এমরান বলেন, “পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে সাত পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।” আহতদের মধ্যে চার পুলিশসহ ১১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মঙ্গলবার সকালে গণ্ডামারায় ঘটনাস্থল থেকে প্রতিবেদক জানান, সংঘর্ষস্থল ও আশপাশের এলাকায় পরিস্থিতি এখনো থমথমে। মানুষের মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ সদস্যদের ওই এলাকায় নিয়মিত টহল দিতেও দেখেছেন তিনি।

বাঁশখালীর এ ঘটনা তদন্তে এক সদস্যের একটি কমিটি করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মমিনুর রশিদ জানান, তাকে এই তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ