চট্টগ্রামে ‘১৫০ কোটি’ টাকার ক্ষতি

 

চট্টগ্রাম ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে বুধবার সৃষ্ট মৌসুমের এই প্রথম ঘূর্ণিঝড় শনিবার দুপুরে আঘাত হেনেছে। এতে রাত ১২টা পর্যন্ত উপকূলীয় সাত জেলায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে চট্রগ্রামে গাছচাপায় এবং ইট পড়ে মারা গেছে নারী-শিশুসহ ১১ জন।

শুধু তাই নয় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে চট্টগ্রামের চার উপকূলীয় উপজেলায় ১৫০ কোটি টাকার ফসল এবং মৎস্য ও পশুসম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।

সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, আনোয়ারা ও সীতাকুণ্ডে রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়েছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ। পানিতে তলিয়েছে পটিয়া এবং রাউজানের ছয়টি ইউনিয়নও।

বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা, ছনুয়া, খানকানাবাদ ইউনিয়ন, সন্দ্বীপের রহমতপুর, উড়ির চর, মগধরা, কালাপানিয়া ও সারিকাইত ইউনিয়নে সমুদ্রের পানি প্রবেশ করে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে ছনুয়া ইউনিয়ন পুরোই তলিয়ে গেছে।

শনিবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে এ চার উপজেলায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার মৎস্য ও পশুসম্পদের এবং ৫০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাঁশখালী ও সন্দ্বীপে বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি ইউনিয়নে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক জানান।

তিনি বলেন, বাঁশখালী উপজেলার ৩০ কিলোমিটার ও সন্দ্বীপের ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্দ্বীপে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করে। তবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় সেখানে আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসক।

পূর্ণিমায় ভরা জোয়ারের সময় ঝড়টি আঘাত হানায় পানির উচ্চতা বেশি ছিল। একারণে বেড়িবাঁধ ভেঙে বাঁশখালী প্রাণহানি সবচেয়ে বেশি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, নগরীসহ জেলায় ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী সময়ে ৪৭৯টি সাইক্লোন সেন্টারে দুই লক্ষাধিক লোক আশ্রয় নেয়। চারটি উপকূলীয় উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য হিসেবে নগদ অর্থ ও চাল দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও তাদের তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করে সহযোগিতা করতে পারবেন। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে পুনর্বাসনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারেও জোর দেওয়া হবে।

ঘূর্ণিঝড়ে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের শঙ্কায় নগরীর মতিঝর্ণা এলাকার পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের শুক্রবার রাত থেকেই মাইকিং করে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান জেলা প্রশাসক।

 

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ