ইরাকের ফাল্লুজা শহর পুনরুদ্ধারে সামরিক অভিযান শুরু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকাঃ আইএসের কাছ থেকে ইরাকের ফাল্লুজা শহর পুনরুদ্ধারে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়ার পর শহরটির দিকে অগ্রসর হয়েছে ইরাকি বাহিনী। এছাড়াও, আইএসের কাছ থেকে এরইমধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় রুতবা শহর পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সোমবার সময় টিভিতে প্রকাশিত এক সংবাদে জানানো হয়েছে এ তথ্য।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়ে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কসহ এর আশপাশের এলাকায় আসাদ বাহিনীর আগ্রাসন বন্ধে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
ইরাক জুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি আর দুর্নীতির অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বাগদাদের গ্রিনজোনে শিয়া সমর্থকদের বিক্ষোভ আর সবশেষ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর সোমবার, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। ভাষণে আইএসের কাছ থেকে দেশটির ফাল্লুজা শহর পুনরুদ্ধারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আবাদির এই ঘোষণার পরপরই ফাল্লুজা থেকে সকল বেসামরিক নাগরিকদের সরে যেতে নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে, ২০১৪ থেকে আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন শহরটি পুনরুদ্ধারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বাহিনী অভিযান শুরু করেছে বলেও জানান আবাদি। একইসঙ্গে, জাতি চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি বলেন, ‘আমাদের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আইএসের হাত থেকে ফাল্লুজার বেসামরিক নাগরিকদের মুক্ত করা। আর লক্ষ্যে সকল সেনা সদস্য ও সাহসী যোদ্ধাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা যেন সবার আগে সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে লড়াই করে।’
এর আগে, আইএসের কাছ থেকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রুতবা শহর এরইমধ্যে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে রোববার দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনী। গত এক সপ্তাহ ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে সিরিয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে জঙ্গিদের অন্যতম রুট হিসেবে পরিচিত এই শহরটি পুরোপুরি দখলমুক্ত করা হয় বলে জানায় তারা।
সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শহরটি পুনরুদ্ধারে এখানকার স্থানীয়রা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের গোপন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন। জঙ্গিরা কোথায় বোমা পুতে রেখেছে, কোন রাস্তাগুলো তারা ব্যবহার করে, কোন রাস্তাগুলো নিরাপদ এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা আমাদেরকে দিয়েছে বলেই শহরটি দখলমুক্ত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।’
এই যখন অবস্থা, তখন মধ্যপ্রাচ্যের আরেক যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের ওপর আসাদ বাহিনীর আগ্রাসন বন্ধে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে দেশটির সরকারবিরোধী বিদ্রোহীপক্ষ। একইসঙ্গে, এই সময়সীমার মধ্যে আগ্রাসন বন্ধ না হলে আসাদ বাহিনীর হামলার পাল্টা জবাব দেয়া হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে তারা।
এদিকে, রোববারও সিরিয়ার হোমস প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা অব্যাহত রাখে দেশটির সরকারি বাহিনী। এদিন, রাসতান ও আল হৌলা শহরের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে একযোগে বিমান হামলা চালায় বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান।
এতে, হতাহতের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানা না গেলেও বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা।