সবার বেতন বৃদ্ধি পেলেও সাংবাদিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন
মনির হোসেন, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকাঃ রোজার ঈদের আগেই নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
২৩ মে (সোমবার) জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে এক মহাসমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এ দাবি জানান। পাশাপাশি বক্তারা জুনের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়ারও দাবি করেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে সকালে এই মহাসমাবেশ শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটায় শেষ হয়। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।
সভায় নেতারা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হলেও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা নানাভাবে বেতন-ভাতার দিক থেকে চরমভাবে বঞ্চিত ও চাকুরিচ্যুত হচ্ছেন।
বিএফইউজের মহাসচিব ওমর ফারুক বলেন, “পঞ্চম ওয়েজ বোর্ডে সাংবাদিকদের বেতন সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় সমান ছিল। কিন্তু তারপরই বেতন বৈষম্য শুরু হয়।”
গতবছর সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে সরকারি চাকুরেদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন করে সরকার। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সশস্ত্র বাহিনীর জন্যও নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন দেওয়া হয়। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও নতুন কাঠামোতে বেতন দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। এরপর থেকেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন সরকারি বেতন কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি জানাতে শুরু করে।
সর্বশেষ ২০১২ সালে সংবাদপত্রের কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে অন্তর্বর্তীকালীন মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণা করেছিল সংবাদপত্রের অষ্টম মজুরি বোর্ড। পরের বছর অষ্টম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণা করা হয়।
বিএফইউজের মহাসচিব ওমর ফারুক অভিযোগ করেন, গত তিন বছর তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের জন্য কোনও কাজ করেছে বলে মনে হয় না। বিএফইউজের নেতা মধূসুদন মণ্ডল ঈদের আগে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা দাবি জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিসহ সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বেড়েছে। “সুতরাং নবম ওয়েজ বোর্ডের দাবি কোনও অযৌক্তিক বিষয় নয়। ওয়েজ বোর্ড শুধু বেতন বাড়ানোর দাবি নয়। এর মধ্য দিয়ে অবকাঠামোও তৈরি হয়।”
তিনি সাংবাদিকদের হয়রানি ও কথায় কথায় চাকরিচ্যুতি না করার জন্য মালিকদেরকে আহ্বান জানান।
নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাজমুন আরা হক বলেন, “মেধাবীরাই কষ্ট সহ্য করেও সাংবাদিকতায় আসেন। অথচ মালিকরা পত্রিকা বের করে সাংবাদিকদের যখন তথন চাকরিচ্যুত করেন। এরকম শতশত সাংবাদিক রয়েছে, বিভিন্ন পত্রিকায় যারা নিজের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।”
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব ওমর ফারুক, সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শাবান মাহমুদ, সহসভাপতি আতিকুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ কার্তিক চ্যাটার্জি, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য মুর্তজা হায়দার লিটন বক্তব্য দেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংবাদের ইউনিট প্রধান অজয় বড়ূয়া, দৈনিক ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের, দৈনিক ডেসটিনির ইউনিট প্রধান মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, দৈনিক করতোয়ার ইউনিট প্রধান মাহমুদুর রহমান খোকন।