গুপ্তহত্যার হিসাব পাই পাই করে নেবো : প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গুপ্তহত্যা করে কেউ পার পাবে না। যারা হত্যা করছে তারা এবং তাদের প্রভু যেই হোক না কেন তাদের আমরা রেহাই দেবো না। যারা পরিবারের ক্ষতি করছে তাদের হিসাব পাই পাই করে নেবো।’
৮ জুন (বুধবার) দশম জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে মহিলা আসন-৩০ এর সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
গুপ্তহত্যা করে দেশে পরিবর্তন আনা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট বাংলাদেশকে দুর্নীতির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দেশ, সাংবাদিক নির্যাতনের দেশ আর জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে পরিচিত করেছিল। আজ সেখানে বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছে।’
বিএনপি-জামায়াত জোট বাংলাদেশকে হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন, দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অব্যাহত অপশাসনে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল। কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে আবারো ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের আজ্ঞাবহ রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে, তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলে। ওয়ান-ইলেভেনের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন নির্বাচনমুখী না হয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তখনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই অগণাতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। আমি আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ও অসুস্থ পুত্রবধুর পাশে থাকতে ২০০৭ সালের মার্চে আমেরিকা যাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল অপচেষ্টা ও প্রতিবন্ধকতা সাহসের সাথে মোকাবেলা করে ২০০৭ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে এলাম। হাজার হাজার মানুষ এয়ারপোর্টে ছুটে এল। এয়ারপোর্ট থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন ও সুধাসদন পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশে ফিরে দেখতে পাই, চারদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যায় আর নির্মম নির্যাতনের ছোঁবল। সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা সকলেই অমানুষিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। গণতন্ত্রকে বুলেট তলায় পিষ্ট করা হচ্ছে। সারাদেশে আতঙ্কের পরিবেশ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দুর্বিষহ সময়ে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলি। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বলি। যেই নির্বাচনের কথা বললাম ঠিক তখনই ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে সুধাসদন থেকে গ্রেপ্তার করা হল আমাকে। প্রথমে ৩ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা দিল। এরপর একটা ছোট্ট ব্রিফকেসে ভরে ওই টাকা দিয়ে গেছে গণভবনে। ৫শ টাকার নোট ৩ কোটি টাকার ওজন হয় ৬৯ কেজি। তিনটা ৩০ ইঞ্চি সাইজের স্যামসোনাই সুটকেস লাগে ৩ কোটি টাকার ৫শ টাকার নোট ভরতে। কিন্তু এমন যাদু তারা জানে যে একটা ব্রিফকেসেই ভরে এনে দিল তিন কোটি টাকা। যা অবাস্তব, কল্পনাপ্রসূত।’