চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে সিনেমা হলের আধুনিকতা এখনই প্রয়োজন
বিনোদন ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা: প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহের আকস্মিক মৃত্যুর পর বড়পর্দায় হাজির হন ফেরদৌস। ১৯৯৭ সালে সালমান অভিনীত অসমাপ্ত ‘বুকের ভিতর আগুন’ শীর্ষক ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পান ফেরদৌস। ছটকু আহমেদ পরিচালিত এ ছবির মাধ্যমেই প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানা তিনি।
এরপর ১৯৯৮ সালে অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ‘পৃথিবী আমারে চায় না’ শীর্ষক ছবির মাধ্যমে এককভাবে নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর পর থেকে বড়পর্দায় নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন। ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘সন্তান যখন শত্রু’ ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘সবার উপরে প্রেম’, ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’, ‘মেহের নেগার’, ‘নন্দিত নরকে’, ‘খায়রুন সুন্দরী’, ‘রানীকুঠির বাকি ইতিহাস’, ‘গঙ্গাযাত্রা’, ‘গোলাপি এখন বিলেতে’, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’, ‘গেরিলা’, ‘এক কাপ চা’সহ প্রায় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন এই সুদর্শন অভিনেতা। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই মুখ চতুর্থবারের মতো ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন সম্প্রতি। তার প্রযোজিত ও অভিনীত ‘এক কাপ চা’ ছবির জন্য তিনি সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান। বর্তমানে অভিনয় নিয়েই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। এরমধ্যে কয়েকদিন আগে নতুন ছবি ‘বাদশা’র কাজ শেষ করে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরেছেন। ছবিটি প্রযোজনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও এসকে মুভিজ। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ভারতের পরিচালক বাবা যাদব। ছবিতে মূল নায়ক জিৎ হলেও গুরুত্বপূর্ন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস । এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছবির কাজটি বেশ ভালোই হয়েছে। এ ছবিতে আমি থাকি মূল বাদশা। মহল্লায় আমার মত হতে চান জিৎ। এরপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। ঈদে ছবিটি মুক্তি পেলে দর্শকরা উপভোগ করবেন বলে আশা করছি। এদিকে এ ছবি ছাড়াও চিত্রনায়িকা মৌসুমী অভিনীত ও পরিচালিত ‘শূন্য হৃদয়’, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘৫২ থেকে একাত্তর’, দিলশাদুল হক শিমুলের ‘লিডার’, সাইফুল ইসলাম মান্নুর ‘পুত্র’, আবির খান ও রাশেদ শামিম পরিচালিত ‘পোস্টমাস্টার ৭১’ এর কাজ শেষ করেছেন। আর এখন বান্দরবানে করছেন মিনহাজুল ইসলাম অভির ‘মেঘকন্যা’ ছবির কাজ। এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন নিঝুম রুবিনা। এসব ছবি নিয়ে ফেরদৌস বলেন, প্রতিটি ছবির গল্প ও সংলাপ ভিন্ন। এরমধ্যে ‘মেঘকন্যা’ ছবির শেষ অংশের কাজ চলছে। আর সাইফুল ইসলাম মান্নুর ‘পুত্র’ তথ্য মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহযোগিতায় তৈরি হয়েছে। অটিস্টিক শব্দটা বলতে আমার ভালো লাগে না। এদের আমি বলি স্পেশাল চাইল্ড। তাদেরকে নিয়ে এ ছবিটি তৈরি হয়েছে। আমাদের দেশে সচরাচর এমন গল্প নিয়ে ছবি হয় না। এ ছবিতে জয়া আহসানও কাজ করেছেন। তাই ভিন্ন ভিন্ন গল্পের এ ছবিগুলো দর্শকরা পছন্দ করবেন বলে আশা করছি। তবে আমি বা আমরা শুধু আশা করলেই হবে না দর্শকদের হলে যেতে হবে ছবি দেখতে। কিন্তু সারদেশে সিনেমা হলের যে বাজে পরিস্থিতি তাতে তো দর্শকরা হলে যেতেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তাই দেশের চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে ছবি নির্মাণ বা অভিনয় করার চেয়ে সিনেমা হলের সংস্কার এখন বেশি জরুরী বলে আমি মনে করি। এদিকে, এবারের ঈদে কলকাতার ছবি ঢাকাসহ সারাদেশে মুক্তি পাবে বলে জানা যায়। সে বিষয়ে ফেরদৌসের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলকাতার ছবি বাংলাদেশে মুক্তি নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও ভারতের ছবি বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে। এটা নিয়ে কথা বলে কি লাভ! কয়েকদিন বিষয়টি নিয়ে উতপ্ত থাকার পর আবার ঠিক হয়ে যাবে। ভালো কাজ করাটাই বেশি জরুরী। এদিকে এরই মধ্যে ফেরদৌস অভিনীত ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘ছেড়ে যাস না’ শীর্ষক ছবিটি শুটিং শেষ করে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছবির সেন্সরও হয়েছে। ছবিটি যৌথভাবে ভারতের রাম মুখার্জি ও বাংলাদেশের নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল পরিচালনা করেছেন। আর প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের ‘ইচ্ছেমত’ ও ভারতের ‘শুভলগ্ন’ নামে দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। এতে ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ভারতের নবাগত নায়িকা রূপসা।