ফলে ফরমালিন খুজে পায়নি শিল্প মন্ত্রণালয়
প্রতিবেদক এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু জানিয়েছেন, ছয় প্রকার ফলের ৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ফরমালিনের কোনো উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এওএসি পদ্ধতিতে এ পরীক্ষা করা হয়।
০৮ জুন (বুধবার) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান মন্ত্রী। পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই’র বিশেষ কর্যক্রম তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পর্যবেক্ষণের (সার্ভিল্যান্সের) মাধ্যমে বাজার থেকে ফল কিনে বিএসটিআইতে ফরমালিন পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে খেজুর ১১টি, আম ২১টি, লিচু ৪টি, মাল্টা ৮টি, আপেল ১৯টি এবং আঙ্গুর ছিল ৫টি। পরীক্ষায় এই নমুনাগুলোর কোনটিতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষার নমুনাগুলোতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি, তার মানে এই নয় ফলে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে না। আমরা যে নমুনাগুলো পরীক্ষা করেছি তাতে ফরমালিন পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘রমজানে যাতে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে, বিষমুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে পারে সে জন্য ঢাকা মহানগরি এবং মহানগরির বাইরে ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় মোবাইল কোর্ট’র কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুরো রমজান মাস জুড়ে সিডিউল অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট চলবে। জেলা প্রশাসক, র্যাব, ডিএমপি ও এপিবিএন’র উদ্যোগে পরিচালিত এ মোবাইল কোর্টে নিয়মিতভাবে বিএসটিআই’র প্রসিকিউটিং অফিসারা থাকবেন।’
মোবাইল কোর্ট মুড়ি, খেজুর, কলা, আম, সফ্ট ড্রিংক পাউডার, ফ্রুট জুস, ফ্রুট ড্রিংকস, ভোজ্য তেল, সরিষার তেল, ঘি, নুডুলস, লাচ্ছা সেমাই, সেমাই, পানি, ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট ইত্যাদির ওপর বিশেষভাবে নজর রাখবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
আমু বলেন, ‘রমজানে যাতে নির্ভেজাল খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়, সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইফতার ও সেহরীতে অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত ১৮৩টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু নমুনার ল্যাবরেটরি টেস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের নমুনা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও জানান, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে ভেজালবিরোধী অভিযানে অভিযানের অংশ হিসেবে ৭৯৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মামলা দায়ের হয়েছে ১১৬৪টি, যার সবকটি নিষ্পত্তি হয়েছে। এ ছভাড়া সার্ভিল্যান্স টিম পরিচালিত হয়েছে ৬৫৮টি। এর মাধ্যমে ৬৬৫টি মামলা হয়েছে।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমান আদালত অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে একই সময়ে ৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন, বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক মো. ইকরামুল হকসহ শিল্প মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।