ইউনেস্কোতে তালিকাভুক্ত হয়েছে জামদানি: আমু

প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকাঃ ইউনেস্কোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’র তালিকায় বাংলাদেশের কারুশিল্প জামদানিও স্থান পেয়েছে।  ইউনেস্কো’র উদ্যোগে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির অষ্টম সম্মেলনে ‘জামদানি’কে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’র তালিকাভুক্ত করা হয়।

১৯ জুন (রোববার) রাজধানীর শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরে জামদানি প্রদর্শনী-২০১৬ এর উদ্বোধনকালে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ কথা জানান।

বিশ্বের ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা নিজ-নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য নিয়ে এ সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করেন।

সম্মেলনে প্রদর্শিত পণ্যগুলোর মধ্য থেকে ইউনেস্কোর জুরিবোর্ড যে ৭টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’র তালিকাভুক্ত করে, তারমধ্যে জামদানি অন্যতম।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন।

আমির হোসেন আমু বলেন,জামদানি আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য এবং পৃথিবীখ্যাত মসলিনের উত্তরাধিকার। এক সময় মসলিন সূক্ষèবস্ত্র হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিল। পৃথিবীর রাজা-বাদশা ও সুলতানগণ সমাদৃত এ বস্ত্রের চাহিদা ও কদরও ছিল।

মসলিন ছিল আভিজাত্যের প্রতীক এ কখা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে হাজার বছর আগেই পৃথিবীতে পরিচিত করেছিল মসলিন অর্থাৎ আজকের জামদানি।

অন্যানের মধ্যে সংস্কৃতি সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুচেন চন্দ্র দাস ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান মো.হজরত আলী।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, জামদানি একটি বংশানুক্রমিক কারুশিল্প। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও উপজেলার কয়েকটি গ্রামে যুগ যুগ ধরে জামদানি তৈরি হয়ে আসছে।

জামদানি শিল্পের উন্নয়নে কারুশিল্পীদের একই স্থানে শিল্প স্থাপনে বিসিক অবকাঠামোগত সহায়তা প্রদান করছে উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, কারুশিল্পীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ প্রদান, উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিপণন সহায়তা প্রদানেও এ সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিসিক’র উদ্যোগে ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নারাণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো ইউনিয়নের নোয়াপাড়াতে ২০ একর জমির উপর ইতোমধ্যে জামদানি শিল্পনগরী ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছে।

মন্ত্রী জানান,এ শিল্পনগরীতে মোট ৪০৯টি শিল্প প্লট রয়েছে, ৩৯৯টি প্লট উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং এখানে ৩৬৩টি জামদানি শিল্প-কারখানা স্থাপিত হয়েছে। সেখানে একটি হাটকর্নার স্থাপিত হয়েছে। সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাটে জামদানি কারুশিল্পীর উৎপাদিত জামদানি বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন।

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি বলেন, জামদানি শিল্পকর্মের শুরুটা পুরোপুরি জানা না গেলেও প্রাচীণ ইতিহাস এবং ঐতিহাসিক ও পর্যটকগণের সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে জানা যায় যে, ‘আমাদের ঐতিহ্যবাহী মসলিনই আজকের জামদানি’।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ