আগের চেয়েও ভাল পারফরর্মেন্স নিয়ে ফিরছেন আশরাফুল
ক্রিয়া ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা: ২০১৩ সালে বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর দায়ে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সব ধরনের ক্রিকেট থেকে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। প্রাথমিক পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৮ বছর হলেও পরে তা কমিয়ে তিন বছরে নামিয়ে আনা হয়। আগামী ১৩ আগস্ট নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ফুরাবে আশরাফুলের।
এর ঠিক একমাস পরেই (সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠেয় ২০১৬-১৭ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ দিয়ে আবার দেশের ক্রিকেটে ফিরতে পারেন তিনি। তিন বছর নিছক কম সময় নয়। এর মধ্যে এদেশের ক্রিকেটে অনেক উথ্থান হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গী হিসেবে থাকতে পারেননি আশরাফুল। ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে গিয়ে গেল তিন বছরের প্রতিটি দিন রাত অনুশোচনায় ভুগেছেন এই টাইগার মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
সম্প্রতি ইন্টারনেট ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মহিবুর রহমান এর কাছে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা ও আশা ব্যক্ত করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে ইতিহাস সৃস্টি করা বাংলাদেশের ক্রিকেটার মোহাম্মাদ আশরাফুল।
‘এতদিন পরে ফিরছি তাই খুবই ভালো লাগছে। দীর্ঘ তিন বছর ক্রিকেটের বাইরে ছিলাম। বিসিবি’র অধীনে খেলতে পারছিলাম না। আন্তর্জাতিক হাইভোল্টেজ ম্যাচগুলোও খেলতে পারিনি। এখন খেলতে পারবো ভেবে অনুভূতিটা দারুণ। প্রস্তুতি নিচ্ছি যেন ফিরে আসাটা ভালো হয়’ জানান আশরাফুল।
লম্বা একটি সময়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই ফিরে আসাকে আশরাফুল দেখছেন ক্রিকেট ম্যাচে জীবন ফিরে পাওয়ার মতোই। আর সেটা আইসিসি ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের বোর্ডের কল্যানে সম্ভব হয়েছে বলে তাদের ধন্যবাদ জানাতে এতটুকু কার্পণ্য করলেন না এই হার্ড হিটার, ‘আমার জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ পাচ্ছি। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আট বছর হলে আমার খেলার আর কোনো সুযোগই ছিল না। তবে আবার খেলতে পেরে আশায় বুক বাধতে পারছি। ভাবেত পারছি যে নতুন করে আবার দুর্দান্ত এক একটি ইনিংস খেলবো। ধন্যবাদ বিসিবি এবং আইসিসিকে তারা আমার শাস্তিটা কমিয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, জাতীয় দলে ফিরতে আমি একশত ভাগেরও বেশি চেষ্টা করবো। প্রতিটি ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে খেলা। এটাকে সামনে রেখেই মূলত সবাই যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করে।
এতদিন কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ২০০৭ এর বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পদক জেতা এই ক্রিকেটার জানান, ব্যক্তিগত ভাবে অনুশীলন করেছি। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বেশির ভাগ সময় অনুশীলন করেছি গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠে। এরপর গেল দুই-আড়াই মাস যাবৎ অনুশীলন করছি আফতাবনগরে। ওখানে একটি একাডেমি আছে, যেখানে আমি নিয়মিত অনুশীলন করছি। জিমের পাশাপাশি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং অনুশীলন করছি নিয়মিতই। আমি পেশাদার ক্রিকেটার। খেলাটাই আমার সব। যে অপকর্মের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম সেটার শাস্তি আমি পেয়েছি। এতদিনে একটি সত্য আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি, সেটা হলো জীবনে কোনো শর্টকাট নেই।
আশরাফুলের ভাষায়, ‘আমি বিশ্বাস করি সুযোগ পেলে আগের চেয়েও ভাল পারফর্ম করতে পারবো। আমি একজন ব্যাটসম্যান। আর ব্যাটসম্যানদের যত বয়স হয়, ততই তারা পরিপক্ক হন। সামনে আমার আরও ভালো করার সময় পড়ে আছে। আগামী ৭-৮ বছর আরও ভাল ক্রিকেট খেলবো আশা করি।’