কাশ্মিরজুড়ে ভয়াবহ বিক্ষোভ, সংঘর্ষে নিহত ১১, আহত ১০০

সুজন কুন্ড, নয়াদিল্লী প্রতিনিধি, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকা: ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে হিজবুল কমান্ডার বুরহান মুজাফ্ফর ওয়ানি নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে শেষ খাবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত এগারোজন নিহত হয়েছেন।

৯ জুলাই (শনিবারের) এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০০ জনের বেশী , যাদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তবে নিহতরা সবাই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।

কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিদর্শক এজেএম গিলানি সংবাদ সম্মেলনে সংঘর্ষে হতাহতের এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শুক্রবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের তরুণ কমান্ডার ওয়ানি ও তার দুই সহযোগী নিহতের প্রতিবাদে পুরো কাশ্মীরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরের অধিকাংশ এলাকা ও দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করে কর্তৃপক্ষ। শ্রীনগরে ব্যাংক ও অন্যান্য অফিস, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

এদিকে পুরো কাশ্মীরজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জম্মু বেইস ক্যাম্প থেকে শুরু হতে যাওয়া অমরনাথ যাত্রা কয়েকদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরির পরীক্ষা।

কাশ্মির উপত্যকার বারামুল্লা থেকে জম্মুর বানিহাল শহর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কাশ্মির দিয়ে যাওয়া শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কও বন্ধ রয়েছে।

এদিন বিক্ষুব্ধ জনতা থানা, তল্লাশি চৌকি, টহল পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর যানবাহনে হামলা চালায় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে শনিবার ওয়ানির নিজের এলাকা ট্রলে ২২ বছর বয়সী এই বিচ্ছিন্নতাবাদীর জানাযায় বহু মানুষকে অংশ নিতে দেখা যায়।

আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বুরহান ওয়ানি কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নতুন পর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন বলে মনে করেন জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ।

বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ে তরুণ কাশ্মিরিদের উদ্বুদ্ধ করতে নিজের যোদ্ধা জীবনের ভিডিও করে সেগুলো ফেইসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করতেন তিনি। তিনি স্থানীয় তরুণদের অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিলেন বলেও বলা হচ্ছে।

এক সময়ের উঠতি ক্রিকেটার ওয়ানি সম্রান্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা ট্রলের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত ব্যক্তিগতভাবে একটি গুলিও না ছুড়ে জম্মু ও কাশ্মিরের শীর্ষ ফেরারিদের অন্যতম একজন নেতা হিসেবে পরিণত হয়েছিলেন ওয়ানি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ