পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নজর দেয়ার তাগিদ ইনুর
সাইফুর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : জঙ্গি দমনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ।
২৩ জুলাই (শনিবার) রাজধানীতে ‘জঙ্গিবাদের উত্থান ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় বিষয়টি ওঠার পর তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিপথগামী শিক্ষার্থী নিয়ে হৈ চৈ করে তাদের উদ্দেশ্যে বলব- চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ঢাকা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুনামধারী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত করে শিক্ষক আছে; যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫ বছর ধরে জামাত-শিবির লালন করে তাদের নিয়ে কেউ কথা বলছেন না।”
সাম্প্রতিক দুই জঙ্গি হামলায় নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসকারি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশের পর এ নিয়ে সোচ্চার হয় নানা মহল।
“আমি অবাক হয়ে গেলাম। এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা জামাত-শিবির করে, যেসব শিক্ষক জামাত করে তাদের বের করে দেওয়া দরকার। কয়েক হাজার শিবিরের ছাত্র আছে, যারা একাত্তরে জন্মগ্রহণ করেনি, তারপরও রাজাকারের আদর্শ মেনে চলে।”
ব্রাক সেন্টার ইন-এ ওই অনুষ্ঠানে তার আগে বক্তব্যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে কথা বলেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, “পিস স্কুল নিয়ে কোনো কথা নেই। নর্থ-সাউথ কারা প্রতিষ্ঠা করেছে? তালিকা দেখুন। জামায়াত-বিএনপি ঘরানার শিল্পপতিরা। মানারাত কে প্রতিষ্ঠা করেছে? জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর স্ত্রী ১৯৭৯ সালে প্রথম মানারাত কিন্ডারগার্টেন করলেন। তারপর সেটা পাকিস্তানের আইএসআই আর সৌদি আরবের টাকায় স্কুল-কলেজ হল। এখন পূর্ণাঙ্গ ইউনিভার্সিটি।”
শাহরিয়ার কবির বলেন, গোলাম আজমের দুই ছেলে আর মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
“সেখানে জঙ্গি হবে না, তো কী হবে। আমরা সেখানে হাতই দিচ্ছি না।”
তার এই বক্তব্যের জবাবে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত লাখ শিক্ষার্থী পড়ে। এর মধ্যে ৫০০ জনও যদি জঙ্গিদের খাতায় নাম লেখায়, তবে সেটা সাধারণ ঝোঁক নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ঝোঁক হচ্ছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৬০০ পাগল জন্মাতেই পারে। ওই পাগলদের শায়েস্তা করার জন্য হেমায়েতপুরের পাগলা গারদ আর ফাঁসির দড়ি আছে।”
শাহরিয়ার কবিরকে পাল্টা প্রশ্নও করেন তথ্যমন্ত্রী: “আপনি একটা মানারাতের কথা বললেন, আরও ১০টি আছে জামাতিরা প্রতিষ্ঠা করেছে। কোই সেগুলোর কথাতো বললেন না?”
আহমাদীয়া মুসলিম জামা’তের আয়োজনে আলোচনা সভায় সংগঠনের আমির মোবাশ্বের রহমান সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক মারুফ রসুল, ফাদার তপন ডি’ রোজারিও, বৌদ্ধ ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় ভিক্ষু বক্তব্য দেন।