দেশের ছবি রক্ষায় প্রয়োজনে রক্ত দেবো
বিনোদন প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকাঃ ‘কেলোর কীর্তি’ বাংলাদেশে মুক্তির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মানববন্ধনে আগত চিএ নায়ক রুবেক বলেন, আজ আমরা রাজপথে দাঁড়িয়েছি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। দেশের ছবি রক্ষার জন্য প্রয়োজনে রক্ত দেবো।
২৯ জুলাই (শুক্রবার) দুপুর ১২টায় সেখানে জড়ো হয়েছিলেন তারা। ভারতের বাংলা ছবি ‘কেলোর কীর্তি’ বাংলাদেশে মুক্তির প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতারা। আন্দোলনকারীরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে ছিলেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার, শিল্পী সমিতির সহসভাপতি ওমর সানি, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, অভিনেতা রুবেল, চিত্রনায়ক জায়েদ খান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বরেণ্য নির্মাতা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কোনো নিয়মকানুনই মানছে না। দেশজ শিল্প-সংস্কৃতির বাইরে আমরা কোনো ছবি চাই না। অস্কার পাওয়া বা পৃথিবীর বিখ্যাত ছবি আসাতে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় ছবি আসবে সেটা চাই না। এমনিতেই আমাদের অবস্থা ভালো না। আমাদের রাস্তায় নেমে আসার অর্থ হলো প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টা জানানো যে, আপনি আমাদের দিকে একটু তাকান। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আপনি একটু নিজের চোখে দেখেন।’
পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘বিতর্কিত উপায়ে বিতর্কিত একটা ছবি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অশ্লীল সংলাপে ভরা একটি অশ্লীল ছবি এটি। এ নিয়ে কলকাতায়ও বিতর্ক হয়েছে। সেখানে চলেনি ছবিটি। আমাদের বিশ্বাস, আমাদের দর্শক এই ছবি বর্জন করবেন। তারা দেশের ছবিই দেখতে চান।’
চিত্রনায়ক রুবেল বলেন, ‘এ ছবির আনার ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা মানা হয়নি। এটি কীভাবে মুক্তি পেলো সেটাই আমাদের জিজ্ঞাসা। আর কে না জানে যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা হচ্ছে। এটাকে ঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য একটা বোর্ড গঠন করতে হবে। আজ আমরা রাজপথে দাঁড়িয়েছি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। দেশের ছবি রক্ষার জন্য প্রয়োজনে রক্ত দেবো।’
নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অসুস্থ ও নোংরা মানের চলচ্চিত্র আমদানি করে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করা হচ্ছে।’
অভিনেতা ওমর সানি বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতা বলে গেছেন, ভিনদেশি ছবি এ দেশে চলতে দেওয়া হবে না। কারা তার আদেশ অমান্য করছে, কোন কোন মানুষ এই পায়তারা করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদেরকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করুন। ভিনদেশি ছবি যেন এ দেশে আর মুক্তি দেওয়া না হয়।’
দেশের অন্তত ৪০টি প্রেক্ষাগৃহে শুক্রবার (২৯ জুলাই) বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পেয়েছে কলকাতার ‘কেলোর কীর্তি’। আইনি জটিলতা পেরোলেও ছবিটিকে ঘিরে উত্তাল অবস্থা বিরাজ করছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। ‘অসম চুক্তি’র মাধ্যমে এটি আমদানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এরই প্রেক্ষিতে চলছে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কর্মসূচি।
মানববন্ধন ও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র উৎপাদন ব্যবস্থাপনা সমিতি, চলচ্চিত্র গ্রাহক সংস্থা, চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র অ্যাকশন গ্রুপ ও সিডাবের নেতাকর্মীরা।