এক হতে যাচ্ছে রবি এবং এয়ারটেল

নিউজ ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকা : বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি এবং এয়ারটেলের ব্যবসা একীভূত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

১ আগস্ট (সোমবার) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজই (সোমবার) সার-সংক্ষেপ হাতে পেয়েছি। এখন আমরা বিটিআরসির কাছে পাঠাবো, তারা নির্দেশনা জারি করবে।

গত ১৩ জুলাই সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের বৈঠকে একীভূতের জন্য মার্জার ফি একশ’ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একীভূত কেম্পানিকে এই মার্জার ফি গুণতে হবে।

সচিব জানান, আগে যে মাশুল ছিল, তাতেই অনুমোদন পাওয়া গেছে।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, মার্জারের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আদালতেই। তরঙ্গ একীভূত করতে ৫০৭ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে ওই সময় জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।

বিটিআরসি জানায়, ২০১১ সালে টুজি লাইসেন্স নবায়নে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের যে মূল্য ছিল তা হিসাব করেইে একীভূত তরঙ্গ মূল্য ৫০৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৫ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গ একীভূত করতে কোনো ফি দিতে হচ্ছে না।
বর্তমানে রবির ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ এবং এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। এয়ারটেলের টুজি লাইসেন্সের মেয়াদ আছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। একীভূত হওয়ার পর যা হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।

বর্তমানে গ্রামীণফোনের রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ তরঙ্গ, যা অন্য সব অপারেটরের চেয়ে বেশি।
রবি-এয়ারটেল মার্জার বা একীভূত করা নিয়ে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি করে বিটিআরসি।
দুই কোম্পানি একীভূত করতে ২৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর রবি আজিয়াটা লিমিটেড জানিয়েছে, একীভূত কোম্পানি রবি নামেই বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করবে।

একীভূত করতে গণশুনানী ছাড়াও অপর চার অপারেটরের মতামত নেয় বিটিআরসি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি চার অপারেটর ইতিবাচক মত দেয়। রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার প্রভাব বিশ্লেষণে বাজার সমীক্ষারও উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি।
এক হওয়া নিয়ে রবি-এয়ারটেলের চুক্তি সম্পাদনের ফলে শেয়ার মূলধনের পুনর্বিন্যাস করা হবে। এতে আজিয়াটা ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ ও ভারত ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বর্তমানের অপর শেয়ারহোল্ডার জাপানের এনটিটি ডকোমোর কাছে থাকবে।

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে চুক্তির পর চুক্তির কার্যকারিতা বিটিআরসি, সরকার এবং আদালতের অনুমোদন পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করে যৌথ ঘোষণায় দুই অপারেটর জানায়, এ প্রক্রিয়া আগামী দুই মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

দুই কোম্পানি এক হলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে ৩ কোটি ৮০ লাখ, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। বর্তমানে পৌনে ৬ কোটি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন সবার শীর্ষে রয়েছে।

বিটিআরসি’র হিসাবে সর্বশেষ মে মাস নাগাদ বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ২৬ লাখ ৪৯ হাজার। এ সময়ে অপারেটর রবির গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৭৭ লাখ ৩ হাজার এবং এয়ারটেলের ১ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ