প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্য করেছেন গণবাহিনীর সাথেঃ হান্নান শাহ
প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্য ঠিকই করেছেন। তবে তৎকালীন গণবাহিনী সন্ত্রাসীদের প্রধান আজকের তথ্যমন্ত্রী ইনুদের সঙ্গে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) আ স ম হান্নান শাহ।
১ জুলাই (সোমবার) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মুদ্রা পাচার মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া সাজার প্রতিবাদে এ প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ করতে বিএনপি কনভেনশন করবে বলেও জানিয়েছেন ।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, আমি এখানে স্পষ্ট বলতে চাই ইনশাআল্লাহ জনগণ ঐক্যমতে পৌঁছুবে। একটা কাউন্সিল অথবা কনভেনশন করা হবে। সবাইকে আমরা দাওয়াত দেব; আওয়ামী লীগকেও দাওয়াত দেব- আপনারা আসেন।
কনভেনশনের উদ্দেশ্য তুলে ধরে হান্নান শাহ বলেন, সেখানে কী করে জঙ্গিবাদ দমন করা যায়, দেশের মধ্যে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা বিদেশ থেকে আমদানি করা আইএস-আল কায়দাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেটা আমরা নির্ধারণ করে দেব।
সরকারকে বলব, এই এই কাজ করো। তবেই জঙ্গিবাদ থাকবে না, সন্ত্রাসী থাকবে না। তিনি বলেন, গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তোলার ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছেন। এই জাতীয় ঐক্য সরকারেরই করা উচিৎ ছিল। তারা তো করেননি, বরং এটাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। জাতীয় ঐক্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে হান্নান শাহ বলেন, এই সরকার নিজেই জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে। গত তিন-চারদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কী হচ্ছে? আপনারা কী সন্ত্রাসীদের চোখে দেখেন না? হান্নান শাহ অভিযোগ করে বলেন, মুদ্রা পাচার মামলায় তারেক রহমান ন্যায় বিচার পাননি। এই বিচার ক্রটিপূর্ণ। ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আইনি পন্থায় আমরা তারেক রহমানকে খালাস করে নিয়ে আসব।
বিএনপির প্রবীণ এ নেতা বলেন, রমজানে তিন দিনে ভারতীয় দূতাবাস দেড় লক্ষ বাংলাদেশিকে ভিসা দিল। যার আসল উদ্দেশ্য ভারতে ঈদের কেনা-কাটা করা। এই দেড় লক্ষ মানুষ যদি বেশি না ৩০ হাজার টাকা করে নিয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ভারতে।
এই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে যায়নি। ভারতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, হিন্দুস্থানে যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়, তার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য আছে, আমেরিকা, ইউরোপের পর আসে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হচ্ছে তৃতীয়।
আমার প্রশ্ন- এই যে কোটি কোটি টাকা ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে উপার্জন করে সেদেশে পাঠাচ্ছে তার মধ্যে কত টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে যায়? এই যে মানি লন্ডারিং হচ্ছে, তা সরকার স্বীকার করে কিনা? যদি স্বীকার না করে, ভবিষ্যতে হিসাব হবে।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্য বলেন, কোমরে যদি জোর থাকলে ভারতে যে মুদ্রা পাচার হচ্ছে এটা বন্ধ করে দেখিয়ে দিন। তাহলেই বুঝব, হ্যাঁ আপনারা সঠিকভাবে মানি লন্ডারিং অপরাধের বিচার করতে জানেন। তিনি বলেন, জনগণকে ধোঁকা দিতে এবং বিরোধী পক্ষকে বেকায়দায় ফেলতেই সরকার নীলনকশা করছে আর সন্ত্রাস দমনে ঐক্য করছে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে। সরকার জঙ্গি দমনের নাম করে জনগণের চোখে ধুলো দিতে নামমাত্র নানা কর্মসূচি দিচ্ছে। সরকার জনগনকে ধোঁকা দিয়ে বিরোধী দলকে নির্মূল করার লক্ষে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করছে।
সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনির হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম পটু, মারুফ আল হাসান, জিয়াউদ্দিন শাহীন, সৈয়দ আজম উদ্দিন, ইয়াসীন আলী, সাদরাজ জামান, আনু মোহাম্মদ শাহীন, কামরুজ্জামান বিপ্লব, সাহাবুদ্দিন মুন্না, লিটন মাহমুদ, রফিক হাওলাদার ও আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বক্তব্য দেন।