জামায়াত আর গন-বাহিনীর ইনুকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনউজবিডি,
ঢাকাঃ জামায়াত আর গন-বাহিনীর ইনুকে বাদ দিয়ে বিএনপিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তিকে এক করে জাতীয় কনভেশন করার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
০২ আগস্ট (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই মতবিনিময় সভা।
এবং আলোচনা সভায় জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক জামায়াতের বিষয়ে অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন বলেন, “ইট হ্যাজ বিকাম এ লায়বিলিটি (দায়)। এটা বর্তমানে অ্যাসেট না। সুতরাং এই দিক থেকে যদি আমরা দেখি, তাহলে প্রতিবন্ধকতা নেই।”
বর্তমানে জামায়াতের অধিকাংশ নেতার জন্ম একাত্তরের পর জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদেরও চিন্তাভাবনা করা উচিত, জাতীয় ঐক্য যদি তাদের কারণে ব্যার্থ হয়, সেটা তারাই বা চাইবেন কেন?”
সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আবারও বলেন, ‘অনতিবিলম্বে জামায়াত এবং গণবাহিনীর ইনুকে (হাসানুল হক ইনু) ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে নিয়ে কনভেনশন আহ্বান করুন। আপনি যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতৃত্বের কথা এখনও মনে করেন, তাহলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তার মধ্যে আপনার যে কয়টি আছে, শুধু তাদের নিয়ে নয়, সকলকে ডাকুন’।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ঘরে ঘরে হবে না। যারা বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে জুতা বানাতে চেয়েছেন, ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছেন, তাদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য করলে জাতি মেনে নেবে না। এজন্য আপনার জাতীয় ঐক্য হয়ে গেছে- এ বক্তব্য এ সভা থেকে আমরা খারিজ করে দিলাম’।
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী ৪ আগস্ট এ দেশের প্রকৃত বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করার কথা রযেছে । বৈঠকে দেশর বর্তমান বিরজমান পরিস্থিতির নিয়েই আলোচনা হবে।
এ ছাড়াও তাকে বলবো, জন্মদিন ১৫ আগস্ট পালন না করতে।
তাকে এর আগেও বলেছিলাম । বেগম জিয়া আমাকে বলেছিলেন, এ রকম একজন মহান নেতার মৃত্যুর দিন আমি এটা পালন করি, আমারও মনে সায় দেয় না । কিন্তু আপনিতো বুঝেন । দলীয় নেতা-কর্মীর কারনে পারি না ।
আর তার ছেলেকে সঠিক ইতিহাসও বলতে বলব । আর যেনো হাওয়া ভবন না করেন’ ।
বঙ্গবীর এক/এগারোর কথা মনে করে বলেন, এদেশে সময় পার হয়ে গেলে অনেকে অনেক কথা মনে করেন না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ।
তিনি বলেন, ঐ সময় আমি এক সেমিনারে গিয়েছিলাম, যখন কিনা অনেক বড় বড় নেতাদের হাটু কাপতঁ ।
তখন আমি বলেছিলাম গোলাম আজম আর নিজামিরা যদি মুক্ত ঘুরে বেড়ায়, তাহলে ৬০ ঊর্ধ্ব বয়সী দুইজন প্রপ্তন প্রধানমন্ত্রীকে অনতিবিলম্বে ছেড়ে দেওয়া হোক। তাদের জেলখানায় রাখা চলবে না ।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মানুষ চায় জীবনের নিরাপত্তা। সেই নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। এ পরিস্থিতিকে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী নামিয়ে আর হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধন করলে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না’।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘সরকারের বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি রয়েছে, তাদের উচিত, জাতীয় সংকটে সরকারকে সহযোগিতা করা। আবার সরকারও যদি ভুল করে, তা দেখিয়ে দেওয়া। আমরা মনে করি, দেশে জাতীয় ঐক্য হবে’।
সরকারকে জামায়াত নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি বলেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মুক্তি দিতে হবে। বিএনপিসহ সব বিরোধী দলকে মত প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বড় সার্বজনীন সমস্যা। দেশে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন। তা না হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমন হবে না’।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা কামাল হায়দার,
উপস্থিত জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম সম্পার্কে বঙ্গবীর বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর আহবানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলাম। তার মৌখিক অনুরোধেই সামনে পছনে না ভেবে স্বাধীনতার মাএ চল্লিশ দিনের মাথায় আমাদের সমস্ত অস্র তার পায়ের কাছে বিছিয়ে দিয়েছিলাম । সেই অনুষ্ঠানে বড় কোন নেতারা যায় নি । প্রধান সেনাপতি যায়নি । কোন মন্্রী যায় নি । সেক্রেটারিও যায় নি ।
সবার ভয় ছিল আমরা বিঙ্গবন্ধুকে জিম্মি করে ক্ষমতা নিয়ে নিব।
সেই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর দুই পুএ শেখ জামাল আর শেখ রাসেল ছিল।
আরো ছিল, জনাব তোফয়েল আহমদ, ঢাকার প্রথম নিব্বাচিত মেয়র মোহাম্মাদ হানিফ আর এই শেখ শহিদুল ইসলাম ছিলেন ।
উপস্থিত ইসলামী আন্দোলনের নেতা মেজবাউর রহমান সম্পার্কে বঙ্গবীর সৃতিচারন করে বলেন, এই মেজাবাউর ছাএ শিবিরের কর্মী হিসেবে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাএ শিবির ত্যাগ করে লন্ডন চলে গিয়েছিল । পরে সে ইসলামি আন্দলন করেছে, এখনও আছে ইসলামের সাথে কিন্তু সে জামায়েত ইসলামির সাথে থাকেনি ।
সভায় আরো বক্তব্য করেন বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা কামাল হায়দার,জাগপার সভাপতি শফিউল, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী আন্দোলনের নেতা মেজবাউর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ডাকসুর ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনছুর প্রমুখ।