‘আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে বলেছি’

চট্টগ্রাম ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,

ঢাকা : প্রকল্প অনুমোদন পাইয়ে দিতে নতুন পাজেরো জিপ এবং বরাদ্দ ছাড়ের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কেটে রাখার প্রস্তাবের বিষয়টি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন উল্লেখ করে আলোচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘মেয়র হিসেবে আমিও সরকারের অংশ, আমার অভিযোগ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পুরো মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নয়।’

১৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) নগর ভবনে মেয়রের দপ্তরে বাংলানিউজের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারদলীয় প্রধান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনয়ন এবং চট্টগ্রামবাসীর ভোটে আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। পাশাপাশি আমি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।’

নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাখ্যা পাঠাবেন জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মাঝখানে রোববার কর্মদিবস ছিল। সোমবার জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে চসিকের নগরজুড়ে মানবপ্রাচীরসহ দলীয় ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।

বুধবার (১০ আগস্ট) থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে ‘স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ শহর’ শীর্ষক নগর সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, অনুষ্ঠানে একটি প্রশ্নের উত্তরে আমি বাস্তবতা তুলে ধরতেই কথাগুলো বলেছি। কারণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে নগরবাসীর প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি যা বলেছি সততার সঙ্গেই বলেছি। আমি চেয়েছি ব্যক্তির যে ভুল তা ধরিয়ে দিতে। আমার বক্তব্যের ভিন্ন ব্যাখ্যা দেওয়া সমীচীন নয়।

সাত দিন সময় বেঁধে দিয়ে মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা চাওয়ায় একদিকে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুব্ধ অন্যদিকে বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। ইতিমধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়ার প্রতিবাদে দফায় দফায় মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠন। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে ছেদ পড়বে কিংবা বরাদ্দ কম পাওয়া যাবে এমন আশঙ্কার বিন্দুমাত্র কারণ নেই। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের এ নগরীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিক। ইতিমধ্যে এ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এ নগরে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেল, তিন ধাপে কাঠগড় পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বেশ কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চার লেন করাসহ অনেক বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সুতরাং হতাশ হওয়ার কারণ নেই।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নানান সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে মেয়র বলেন, চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় চসিকের দায়িত্ব নিয়েছি। আর্থিক সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি বড় সমস্যা জনবল সংকট। প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান রাজস্ব কমকর্তাসহ অনেক শীর্ষ পদই শূন্য পেয়েছিলাম। এত কিছুর পরও নগরীর বিলবোর্ড উচ্ছেদের মতো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ সম্পন্ন করেছি, যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতার পর এতগুলো বছর পার হলো অথচ চসিকের অর্গানোগ্রামই ঠিকভাবে করা হয়নি। এখন বাস্তবতার নিরিখে নতুন অর্গানোগ্রাম তৈরির ওপর জোর দিচ্ছি। জনবল সংকট কাটাতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেবো কীভাবে?

তিনি বলেন, ডোর-টু-ডোর বর্জ্য সংগ্রহে প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু করেছি। সব ওয়ার্ড যখন এ কার্যক্রমে নিয়ে আসবো তখন আর চট্টগ্রামের মানুষ বর্জ্য দেখবে না। উন্মুক্ত ডাস্টবিন বা বর্জ্য উপচে পড়া কনটেইনার থাকবে না চট্টগ্রামে। একই সঙ্গে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জলাবদ্ধতা সংকট নিরসনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বেড়িবাঁধ, চার লেনের সড়ক, ২৬টি খালের মুখে পাম্প হাউসসহ স্লুইসগেট স্থাপনের মতো বড় একটি প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে। আমি বিশ্বাস করি, চট্টগ্রামের উন্নয়নে মেয়রের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরাও বিষয়টি উপলব্ধি করছেন। আশাকরি, সমন্বিত উদ্যোগে নগরবাসীর শতভাগ আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবো।

 

 

সূত্রঃ বাংলা নিউজ

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ