নির্বাহী হাকিম-ওসিকে হাইকোর্টে তলব, শিক্ষার্থীকে জামিন

বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : (২১ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে করা মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে টাঙ্গাইলের এক স্কুলছাত্রকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুই বছর সাজা দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী হাকিম) ও সখীপুর থানার ভারপপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তলব করেছেন হাইকোর্ট।

ওই শিক্ষার্থীকে কীভাবে গ্রেপ্তার করা হলো ও কিসের ভিত্তিতে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সে-সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম রফিকুল ইসলাম ও ওসি মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমকে ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রকে জামিন দেওয়া হয়েছে। ধার্য তারিখে তাকেও তার বিদ্যালয়ের সনদ ও বয়স-সংক্রান্ত তথ্যাদি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

‘বয় জেলড ফর এফবি কমেন্ট অ্যাবাউট এমপি’ শিরোনামে ২০ সেপ্টেম্বর ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি আদালতে তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন। রুলে সাজা দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শামসুদ্দোহা তালুকদার।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাংসদ অনুপম শাহজাহানকে নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় একটি জিডি হয় বলে ওই প্রতিবেদনে এসেছে। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই শিক্ষার্থীকে দুই বছরের কারাদন্ড দেন। আইন অনুসারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের স্পটে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে, এ ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। তিনি বলেন, জিডি হলে তদন্ত হবে। এ অবস্থায় এভাবে দন্ড দেওয়া যায় না। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইন অনুসারে অপরাধ হলে সে জন্য মামলা করতে হবে। এই আইনের মামলা বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল আছে। স্কুলপডুয়া বলে ওই শিক্ষার্থী শিশুও হতে পারে। যদি তা হয়, তাহলে বিষয়টি যাবে শিশু আদালতে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকে সাংসদকে ‘হুমকি’ দেওয়ায় টাঙ্গাইলের সখীপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইসিটি আইনে এক স্কুলছাত্রকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দুই বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন। সে সখীপুরের প্রতীমা বংকী পাবলিক হাইস্কুলের ছাত্র। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ছিলেন ইউএনও রফিকুল ইসলাম। সোমবার ওই স্কুলছাত্রকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

আদেশের পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শামসুদ্দোহা তালুকদার এবিসিনিউজবিডিকে বলেন, আইসিটি আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে পারেন না। মন্তব্যের জেরে জিডি হয়েছে, এর তদন্ত হবে। কিন্তু আটকের পর সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ওই শিক্ষার্থীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত দন্ড দেন। এটি কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হলো, তার ব্যাখ্যা জানাতে নির্বাহী হাকিম ও ওসিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

এবিসিনিউজবিডি/ঢাকা/২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ