সড়ক থকবে পার্কিং ও হকার মুক্ত
চট্টগ্রাম ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে পার্কিংয়ের জন্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্ধারিত জায়গা ছাড়া সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করালেই জরিমানা এবং সড়কের ওপর হকার থাকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
০৯ অক্টোবর (রোববার) দুপুরে চসিকের বাজেট অধিবেশনে যানজট সম্পর্কিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, দুর্গাপূজা নিয়ে পুলিশ ব্যস্ত। পূজা শেষে ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে পার্কিং স্পেস নির্ধারণ করে দেবো। এরপর সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করালেই জরিমানা করে দেওয়া হবে। কার গাড়ি সেটি দেখা হবে না।
সড়ক ও ফুটপাত হকারমুক্ত করা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, হকারদের পুনর্বাসন চসিকের পক্ষে সম্ভব নয়। আবার উচ্ছেদ করার পক্ষপাতিও আমি নই। তারা এদেশের সন্তান। এ নগরে ১২ লাখ বস্তিবাসী আছেন। যারা হতদরিদ্র কিংবা নিম্নআয়ের মানুষ। তারা হকারদের কাছ থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কেনে। তবে রাস্তার ওপর কোনো হকারকে বসতে দেব না। প্রথম ধাপে সড়কের ওপর থেকে হকারদের তুলে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে ফুটপাতে হকারদের জায়গা মার্কিং করে দেওয়া হবে, তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
বাজেট ঘোষণায় দেরি হওয়া সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, দেরিতে বাজেট ঘোষণায় করপোরেশনের কাজে ব্যাঘাত ঘটেনি। গতানুগতিক বাজেট সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবসম্মত ও নগরবাসীর জন্যে কার্যকর বাজেট ঘোষণা করতে চেয়েছি বলেই কিছুটা সময় নিয়েছি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩২৯ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের বিপরীতে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১৯৭ কোটি প্রস্তাব সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, আমি চসিককে স্বাবলম্বী করতে চাই। আইনগতভাবে গৃহকর, সাইনবোর্ড কর, ট্রেড লাইসেন্স খাতে চসিকের যে পাওনা তা যদি আদায় করা যায় তবে আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। প্রথম অর্থবছরে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা অবসরে চলে যাওয়া। ওই পদে আমার একান্ত সচিবকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে রাজস্ব বিভাগ নিয়ে অনেক কানাঘুষা ছিল। রাজস্ব খাতে অস্থায়ী কর্মচারী ছিল যারা দৈনিক ২৪০ টাকা ভাতা পেতেন। মনিটরিং ছিল না। অনিয়ম-দুর্নীতি ছিল। কর আইনের বাইরে গিয়ে বর্গফুট হিসেবে কর আদায় করা হতো। স্বচ্ছতা-জবাবদিহি ছিল না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কর আইন সম্পর্কে নগরবাসীকে ধারণা দিয়েছি। কর ধার্যের হিসাব যাতে সবাই বোঝেন সে লক্ষ্যে লিফলেট দিয়েছি। কাউন্সেলিং করেছি। নতুন করে ১১টি ওয়ার্ডে অ্যাসেসমেন্ট করেছি। অবশ্য ক্রস চেক ও আপিল চলছে। করদাতাকে আইন আপিল করার অধিকার দিয়েছে। আগে যেখানে ৩১ কোটি টাকা কর আসত এখন সেখানে ১২৫ কোটি টাকা বাড়ছে। আরও ৩০টি ওয়ার্ড আছে, সেখানে আরও ৩৭৫ কোটি টাকা বাড়বে। এর ফলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে চসিক স্বাবলম্বী হবে।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহরে অনেকেই ব্যবসা করছেন। আল্লাহর ওয়াস্তে কেউ ইচ্ছে করলে চসিকের ট্রেড লাইসেন্স নিতে আসেন। এখন আমরা জোর দিয়েছি এ খাতে। যত সাইনবোর্ড আছে প্রতি বর্গফুট ৮০ টাকা হিসেবে কর পাবে চসিক। এটি হচ্ছে আমাদের রাজস্ব আদায়ের মেকানিজম।
২০১৫ সালে আমি দায়িত্বভার গ্রহণের সময় চসিকের মাসিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি টাকা, এখন তা ১৭ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এ ছাড়া যেসব প্রকল্প সহায়তা সরকার অনুমোদন করে তার মধ্যে চসিকের তহবিল থেকে ২৫ শতাংশ জোগান দিতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে চসিকের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহার সময় দ্রুত বর্জ্য অপসারণে চসিক পরিবারের টিম ওয়ার্কের জন্যে প্রশংসা করে মেয়র বলেন, কেউ বলতে পারবেন না কোরবানির বর্জ্য অপসারণে দেরি হয়েছে। দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সিটি করপোরেশন চট্টগ্রাম। নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে আমি আশাবাদী। বিশ্বনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় নাগরিক প্রত্যাশা শতভাগ পূরণ করতে পারবো।