সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হবে, এটা সকলের দায়িত্ব’
নিউজ ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার আহ্বান থাকবে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে আমাদের সর্বতভাবে নিরাপত্তা দিতে হবে। এটা আমাদের সকলের দায়িত্ব’।
১০ নভেম্বর (শনিবার) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ’। আমাদের ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণীও তা–ই। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মানুষ খুন করা কিন্তু ইসলামের পথ না।
ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই জনগণের প্রতি- সকলে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন’। যে কারণে আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবেন। এটাই ইসলামের কথা, এটাই আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কথা এবং আমরা সেটাই মেনে চলি।
তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেব না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ’। কারণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বিএনপির কোনো এক নেতা কিছুদিন আগে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনের কী দেখেছে, নভেম্বর মাসে হবে আসল আন্দোলন’। তাদের আন্দোলন যদি হয় আবারও এই মানুষ খুন করা, মানুষের ঘরবাড়ি পোড়ানো, সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত-নির্যাতন করা এবং এর মাধ্যমে দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করা, সেই আন্দোলন কোনো দিনও মানুষের সমর্থন পাবে না। এই পথ জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটাই চাইব যে আমাদের দেশের সকলে, যেমন মসজিদের ইমামরা জুমার নামাজের আগে যে খুতবা দেন, সেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সম্পর্কে আমাদের ইসলাম ধর্মে কী আছে, নবীজি কী বলেছেন, কোরআন শরিফে কী বলা আছে, তা মানুষের কাছে তুলে ধরবেন।’ বিষয়টা মানুষকে ভালোভাবে জানাতে হবে। যাতে কেউ বিপথে না যায়। এ ধরনের আত্মঘাতী পথে পা না বাড়ায়।’
‘আমি অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মজীবী, সাধারণ জনগণ সবাইকে আহ্বান জানাব, সকলের যৌথ উদ্যোগেই আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব’।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপির আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা ও মানুষকে পুড়িয়ে মারা—এটা কখনো মানুষের কাজ নয়। এ কথা সব সময় সবাইকেই মনে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই আমাদের দেশে সব সময় সম্প্রীতি বজায় থাকবে, দেশ উন্নত হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বিশ্ববাসী স্বীকার করে, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল’। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হয়। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি ৪৫ বছর হয়ে গেছে। আজকে যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন, তাহলে এই বাংলাদেশ আরও বহু আগেই উন্নত হতে পারত। কিন্তু তার সেই অসমাপ্ত কাজ আমাদের সম্পন্ন করতে হবে। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত জীবন পাবে, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।