নৃশংসতার বিরুদ্ধে জাগ্রত হোক বিবেক

বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : ঝিনাইদাহ’র কালীগঞ্জ থানার নলডাঙ্গা গ্রামের বর্গাচাষী শাহনূর বিশ্বাসের দুই মেয়েরে কলেজ ও স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শাহনূর বিশ্বাসের দুই পা কেটে ফেলার পর মেয়েদের শিক্ষা জীবনের মতই তার জীবনও থমকে গেছে। বর্গাচাষ করে আর পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করা হবে না তার। সামনে এখন শুধুই অন্ধকার জীবন। সন্তানদের শিক্ষা জীবন না হয় শেষই হল, কিন্তু পরিবারের ভরন-পোষন কি দিয়ে করবেন, কিভাবে করবেন? সবই এখন তার কাছে অস্পষ্ট।

রাজধানী ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালের বিছানায় পঙ্গুত্ব বরন করে নেওয়া শাহনূর বিশ্বাস এখন নির্বাক।  ২৫ নভেম্বর এই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদাহ থেকে অনেকেই ছুটে এসেছেন তাকে সান্তনা দিতে। সান্তনার প্রতিউত্তরে শাহনূরের দু’চোখ থেকে শুধুই অশ্রু ঝড়েছে। কোন সান্তানাই যে তার বাধ ভাঙ্গা কান্না থামাতে পারছিল না।

একজন অসহায় বর্গাচাষীর জীবন থমকে দেওয়ার নায়ক একই গ্রামে বসবাসকারী কালীগঞ্জ থানার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল। এমন নৃশংসতার পরও ক্ষমতাধর কামালের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা যাচ্ছিল না। কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর গণমাধ্যমের চাপে শেষ পর্যন্ত মামলা দায়ের হলেও পুলিশ মাত্র দুজন আসামিকে গ্রেফতার করেছিল। মুল আসামি কামালকে তারা ধরতে পারেনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর কামালসহ বাকি ১৪ আসামি ঝিনাদহের আদলতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

শাহনূর বিশ্বাসের বড় মেয়েকে যশোর মহিলা কলেজে সম্মান প্রথম বর্ষের আর ছোট মেয়ে পাশের একটি সরকারী স্কুলের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী। যুবলীগের ক্ষমতাধর এই নেতার বাড়ির উপর দিয়েই কলেজ আর স্কুলে যেতে হতো তাদের। কামাল আর তার সহযোগিদের ভয়ে শাহনূরের বড় মেয়ের কলেজে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে বেশ আগেই। আর শাহনূর বিশ্বাসের পা হারানোর মধ্য দিয়েই পরাশুনা শেষ হলো ছোট মেয়ের।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ