উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় হাত-পা থেঁতলে দেওয়া হলো
স্টাফ রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, যশোর: যশোরে বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ভাইকে পিটিয়ে হাত-পা থেঁতলে দিয়েছে বখাটেরা। হামলার শিকার মো. তুহিন ইসলাম (২৮) যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আজ শনিবার দুপুরে যশোরের চৌগাছা উপজেলার মাঠ চাকলা গ্রামের স্থানীয় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তুহিন উপজেলার মাঠ চাকলা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার বজলুর রশীদ বলেন, ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে তুহিনের চার হাত-পা পিটিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। অবস্থা গুরুতর। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না। কাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে বিস্তারিত বলা যাবে।
আজ সন্ধ্যায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডের দুই নম্বর বিছানায় তুহিনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর চার হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ লাগানো। পাশে বসে কাঁদছেন মা জাহেরা খাতুন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তুহিন ইসলাম বলেন, সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় বাজারে আটা কিনতে গেলে আলাউদ্দীন, জুয়েল, আশা ও মিকাইল নামের চার বখাটে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় পিচঢালা রাস্তার ওপর তাঁকে দুজন ধরে রাখে। অন্য দুজন হাতুড়ি দিয়ে দুই হাতে আঘাত করে। এতে তাঁর ডান হাতের কবজি ভেঙে গেছে। বাম হাতেরও একই অবস্থা। বখাটেরা দুই পা রড দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দিয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাঁকে প্রথমে চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
তুহিন অভিযোগ করেন, ‘হামলাকারী বখাটেরা সবাই স্থানীয় (হাকিমপুর) ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসানের অনুসারী। তাঁর ইন্ধনেই তাঁরা এভাবে মারার সাহস পেয়েছে। মারধরের সময় চেয়ারম্যান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।’
তুহিনের মা জাহেরা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে জুয়েলসহ কয়েকজন কু-প্রস্তাব দিত। তুহিন তার প্রতিবাদ করত। কয়েক দিন আগে এক রাতে ওই চারজন আমাদের ঘরে উঠে যায়। সে সময় তুহিন তাঁদের পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। সেই থেকে ওদের রাগ। ওদের ভয়ে মেয়েটা ঘরের বাইরে যেতে পারে না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে শুনেছি আলাউদ্দীন ও জুয়েলসহ কয়েকজন মিলে তুহিনকে মারধর করেছে। তাঁরা কেউ আমার লোক না। চেয়ারম্যান হিসেবে আমার তেমন কিছুই করার নেই। কারণ, আমি উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক। আর যারা মেরেছে তাঁদের মধ্যে আলাউদ্দীন হাকিমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি বিএনপির লোক হয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লোকজনের বিচার করব কীভাবে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে আলাউদ্দীন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। পরে শুনলাম, জুয়েলসহ কয়েকজন তুহিনকে মারধর করেছে।’
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মসিউর রহমান বলেন, ‘পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েকজন মিলে তুহিনকে মারধর করেছে বলে শুনেছি। মামলা হয়নি। আহতের পরিবারের লোকজনদের থানায় আসতে বলেছি।’