জিয়া আদর্শিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আদর্শিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আজ বৃহস্পতিবার সংসদে হাবিবুর রহমান মোল্লার এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। তিনি একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সরকারের অধীনে যুদ্ধ না করে ওয়ার কাউন্সিল গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ করার প্রস্তাব করায় মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিলেন। পরে জিয়া ক্ষমা প্রার্থনা করে পুনরায় সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব নেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জিয়া খুনি খন্দকার মোশতাকের দোসর হিসেবে আলাদা কনফেডারেশন গঠনের চক্রান্তে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশের দূতাবাসের চাকরি দিয়েছিলেন। এই খুনিদের বিচার বন্ধের আইন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী, যুদ্ধাপরাধী আবদুল আলীমসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়ে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু করে প্রমাণ করেছেন যে তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন আদর্শিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না।
মন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সমর্থক ছিলেন বলেই জিয়া ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে ‘সোয়া (সোয়াত) জাহাজ’ থেকে পাকিস্তানি সমরাস্ত্র খালাস করার জন্য উদ্যোগী ছিলেন।
লায়লা আরজুমান বানুর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈনিকদের পরিবারকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, সরকার সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। ইতিমধ্যে যুদ্ধাহত ও খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে।
এ টি এম আবদুল ওয়াহহাবের প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল এবং ঘরবাড়িতে আগুন দিয়েছিল—এ কথা যারা অস্বীকার করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন তৈরি করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।
মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমানবাহিনীর জন্য আটটি মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
জাসদের লুৎফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের অন্যান্য শহরের মতো ঢাকার তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে অপরিকল্পিত ভূমির ব্যবহার ও নগরায়ণের ফলে ঢাকার তাপমাত্রা কতটা বেড়েছে, সে সম্পর্কিত গবেষণা পরিবেশ অধিদপ্তর করেনি।
প্রশ্নোত্তরের আগে বিকেল চারটার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।