অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার চান মেয়র প্রার্থীরা

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের কাছে থাকা অনুমোদিত (লাইসেন্স) অস্ত্র জমা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা।

প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সবাই করা হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে কোনো অপরাধ ও অনিয়ম হলে বরদাশত করা হবে না। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে এর মধ্যেই জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সেই মোতাবেক কাজ করছে।

নির্বাচন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাত মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রার্থীরা তাঁদের দাবি তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া।

সভায় মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হবে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে অনাস্থা রয়েছে। বিদায় বেলায় ইসি এই নির্বাচনে মানুষকে স্বস্তি দিয়ে যাবে এবং দুর্নাম ঘোচাবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, অতীতে নারায়ণগঞ্জকে কলঙ্কিত করেছে—এমন সন্ত্রাসীদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। জেলার অনেক বিতর্কিত লোককে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও লাইসেন্স করা এসব অস্ত্র জমা নিতে হবে। তা ছাড়া নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মীদের যাতে পুলিশ হয়রানি না করে, সে ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা চান এবং সেনা মোতায়েনের দাবি জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ​ আইভী বলেন, ‘আমি ২০০৩ ও ২০১১ সালে কঠিন ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জনগণের সমর্থনে নির্বাচিত হয়েছি। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো সুবিধা নিচ্ছি না। প্রশাসন দিতে চাইলেও নেব না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারে।…সাখাওয়াত হোসেনের তুলনায় আমার জীবনের ঝুঁকি আরও বেশি। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করছি।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রশাসন যেন কাজ না করে, সে ব্যাপারে ইসিকে সতর্ক থাকতে বলেন। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌস ভোটারদের সুষ্ঠুভাবে ভোট দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এলডিপির প্রার্থী কামাল প্রধান অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এসে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করেছেন। গণমাধ্যমে খবর এলেও নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা এজহারুল হক বলেন, ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে কি না, সে ব্যাপারে মানুষের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। এই শঙ্কা দূর করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক, র‍্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক কামরুল হাসান প্রমুখ।

মতবিনিময় সভার আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ​ আইভী ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়া, ভূঁইয়াপাড়া, লামাপাড়া, বউ বাজার ছোট কবরস্থান ও বড় কবরস্থান এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণা চালান। আর বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন নগরীর উত্তর চাষাঢ়া, চাঁদমারী, মিশনপাড়া, ডনচেম্বার এলাকায় এবং বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণা চালান।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ