জরিপকে ষড়যন্ত্রের অংশ বলল বিএনপি
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জরিপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হাস্যকর আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, বাস্তবের সঙ্গে এই জরিপের বিন্দুমাত্র মিল নেই। এটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।
আজ শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক জরিপের বিষয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানান।
রিজভী বলেন, ‘জরিপে বলা হয়েছে, এখন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ শতকরা ৩৮ ভাগ, বিএনপি শতকরা ৫ ভাগ ভোট পাবে। জরিপটি শুধু হাস্যকরই নয়; এটি সত্যের অপলাপ মাত্র। জরিপকারীরা কীভাবে তথ্য, উপাত্ত, নমুনা সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করেছেন, তা গভীর ষড়যন্ত্রেরই অংশ। বাস্তবের সঙ্গে এই জরিপের বিন্দুমাত্র মিল নেই।’
রিজভীর ভাষায়, ‘দেশে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি, দেশজুড়ে খুনের উৎসব চলছে, নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা, বন্দুকযুদ্ধ-ক্রসফায়ার-বিচারবহির্ভূত হত্যা, একের পর এক গুমের হিড়িক, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, বিরোধী দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রহসনের বিচার, ঘাটে-মাঠে-নদী-নালায় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকাসহ অসংখ্য বীভৎস অমানবিক ঘটনা ঘটে চলছে এই বিনা ভোটের সরকারের আমলে। সুতরাং, অনাচারে লিপ্ত একটি সরকার জনসমর্থনে এগিয়ে থাকবে—সেটা শুধু গণতন্ত্রহারা বাংলাদেশি মানুষকে উপহাস করাই নয়, বরং এই জরিপটি যে আন্তর্জাতিক মাস্টারপ্ল্যানের একটি অংশ তা সহজেই অনুমেয়।’
রিজভী দাবি করেন, ‘পৃথিবীতে কোনো অনির্বাচিত সরকারই জনপ্রিয় নয়। বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য একমাত্র হত্যা ও রক্তপাতকে নিজেদের টিকে থাকার কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে। বাংলাদেশের বর্তমান ‘ভোটারবিহীন’ সরকারও সেই কাজটি করছেন। গতকাল জাতিসংঘ বলেছে, চলতি বছরে দেশে দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। বাংলাদেশে সেই ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটেছে বেশ আগেই, এ বছর তা আরও বেশি ভয়াবহ নির্দয় রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইউএসএইড ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউকেএইডের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল গত ২৩ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত একটি জরিপ পরিচালনা করে। গতকাল তা প্রকাশ করা হয়।
জরিপের একটি অংশে দেখা গেছে, ৩৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নাম বলতে চাননি, যেটি ২০১৪ সালের জরিপে ছিল ৫ শতাংশ। জরিপে বলা হয়, আজ যদি নির্বাচন হয় তাহলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ পাবে ৩৮ শতাংশ ভোট। আর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পাবে ৫ শতাংশ ভোট। জাতীয় পার্টি ১ শতাংশ ও জামায়াতে ইসলামী পাবে ২ শতাংশ ভোট। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পরিচালিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জরিপে আওয়ামী লীগ ৩৮ শতাংশ এবং বিএনপি ৩৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। এবার আওয়ামী লীগের ভোট একই থাকলেও বিএনপির ভোট ৫ শতাংশে নেমে গেছে বলে জরিপে বলা হয়।