দিয়াজের পুনঃ তদন্তে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মরদেহের পুনঃ ময়নাতদন্ত আজ রোববার সম্পন্ন হয়েছে। এতে তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদকে প্রধান করে গঠিত তিনজনের প্রতিনিধিদল পুনঃ তদন্ত করে। বাকি দুই চিকিৎসক হলেন প্রদীপ বিশ্বাস ও কবির সোহেল।
ময়নাতদন্ত শেষে সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা এখনই কিছু বলতে চাইছি না। পুরো তদন্ত শেষে বলা যাবে। যেখানে লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে আমরা যাব। সেখানেও তদন্ত করা হবে। এ ছাড়া তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলব।’ তিনি আরও জানান, মরদেহ থেকে নেওয়া নমুনা (দাঁত, ভিসেরা, নেক টিস্যু) পরীক্ষা করা হবে।
আদালতের নির্দেশে পুনঃ ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল শনিবার কবর থেকে তোলা হয় দিয়াজের মরদেহ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ-সংলগ্ন কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশটি তোলা হয়। পরে লাশ নিয়ে ঢাকায় আসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল।
দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় গত ২১ নভেম্বর। ২৩ নভেম্বর পুলিশ জানায়, দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে—এমন আলামত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মেলেনি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়াজের পরিবারসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটি অংশ। তারা বলে, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের সঙ্গে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের কোনো মিল নেই।
দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শুনেছি, দিয়াজের হত্যাকারীরা ঢাকাতেও তদন্ত প্রতিবেদনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই, সুষ্ঠু ও সঠিক তদন্ত হোক। সুরতহাল প্রতিবেদনের সঙ্গে যেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের মিল থাকে। আমরা দিয়াজের শরীরে আঘাতগুলোর ব্যাখ্যা চাই।’
৬ ডিসেম্বর সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দিয়াজের মরদেহ তুলে আবারও ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। এ জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধানকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন আদালত।
গত ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট এলাকার নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ২২ দিন আগে দিয়াজসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের চার নেতার বাসায় তাণ্ডব চালানো হয়। ৯৫ কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী নেতা-কর্মীরা ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যাওয়ার আগে দিয়াজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।