প্রীতিভোজে অপ্রীতিকর কাণ্ড ছাত্রলীগের !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বিজয় দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। সেই প্রীতিভোজে খাবারের প্যাকেট সংগ্রহ করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষের জড়ায়। এতে অন্তত সাতজন আহত হন। এ সময় প্রক্টরকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। সাদ্দাম হোসেন হলেও দুপুরে খাবার পরিবেশন চলছিল। এই হলে খাবার পরিবেশনের সময় হল কমিটির সহসভাপতি নওশাদ কবির হলের ডাইনিং রুমে ছিলেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে থাকা হল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর ডাইনিংয়ে গিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের আগে খাবার দিতে বলেন। খাবার আগে-পরে নেওয়াকে কেন্দ্র করে নওশাদের সঙ্গে সাগরের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে ছাত্রলীগের কর্মী হিসাববিজ্ঞান বিভাগের জসিম, নীল, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের হৃদয়, মার্কেটিং বিভাগের মিজান, আশিক, হিমেল ও জাকির আহত হন। এঁদের মধ্যে জসিম ও মিজানকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রক্টর মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রক্টরকে লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আরিফুল ইসলাম। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। নওশাদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাস ও সাগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুসারী বলে পরিচিত।
সংঘর্ষের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর অভিযোগ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পক্ষের কর্মী নওশাদ ও তাঁর অনুসারীরা বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে টোকেন ছাড়াই খাবার নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এতে বাধা দেওয়ায় তাঁরা বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান।’
নওশাদ কবির পাল্টা অভিযোগে বলেন, ‘আমরা খাবার নিতে গেলে হল সেক্রেটারি সাগর বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে আমাদের ডাইনিং রুম থেকে বের করে দেয় এবং খারাপ আচরণ করে। একপর্যায়ে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা করেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার দাস বলেন, ‘২৫টি টোকেন দিয়ে আমার ছেলেদের খাবার নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলাম। পরে একটি ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করার জন্য বলেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সুশৃঙ্খলভাবে খাবার বণ্টনের জন্য হল কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে ছাত্রলীগের মধ্যে কিছু বহিরাগত ঢুকে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনার বিষয়ে প্রক্টর মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের সঙ্গে বহিরাগত ব্যক্তিরা থাকায় এমনটি হয়েছে। ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি।’ লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দুই পক্ষের মাঝে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। এতে হয়তো কারও ধাক্কা লাগতে পারে।’