রাজউকের কর্মকর্তা এত সম্পদের মালিক !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মাত্র পাঁচ বছরে প্রায় ৬০০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এর বাইরেও তাঁর বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক সহকারী পরিচালক (আইন) ইকবাল পারভেজ। গতকাল রোববার রাজধানীর ওয়ারী থানায় মামলা করার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, ইকবাল পারভেজকে গ্রেপ্তারের পর রমনা থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। আজ সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে। সূত্র জানায়, সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের মুহুরি ইকবাল পারভেজ রাজউকে সহকারী পরিচালক (আইন) হিসেবে চাকরি পান। ইকবাল পারভেজের অবৈধ সম্পদের বিস্তারিত বর্ণনাসহ ১৫৫ পাতার অভিযোগ পেয়ে গত বছরের শেষ দিকে তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানায়, গুলশান, বনানী ও মতিঝিল এলাকায় সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বিভিন্ন সিন্ডিকেটের যোগসাজশে ভুয়া মালিক সাজিয়ে বিক্রি করে দেন তিনি। পাঁচ বছরে রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তিনি বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছেন।
গতকাল ওয়ারী থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুদকের অনুসন্ধানেই ইকবাল পারভেজের প্রায় ৬০০ শতাংশ জমি কেনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রি অফিসে করা ওই সব জমির দলিলমূল্য দেখানো হয়েছে তিন কোটি টাকার কিছু বেশি। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাস্তবে এসব জমির মূল্য অনেক বেশি।
এ ছাড়া টিকাটুলীতে কিংস প্লাজায় ইকবাল পারভেজের নামে ১ হাজার ৪০০ বর্গফুটের একটি অফিস রয়েছে, যার বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা। তাঁর একটি গাড়ি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে এজাহারে।
দুদকের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে তা দিয়েই মামলা করা হয়েছে। তবে ইকবাল পারভেজের সম্পদের পরিমাণ আরও অনেক বেশি। তদন্ত পর্যায়ে ওই সব সম্পদের তথ্য-প্রমাণ হাজির করা হবে। তাঁদের ধারণা, সব মিলিয়ে ইকবাল পারভেজের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকারও বেশি।
সূত্র জানিয়েছে, ইকবাল পারভেজের নামে কদমতলী এলাকায় ২০ কাঠা জমি, মেরাজনগরে সাততলা ও তিনতলা দুটি বাড়ি, কদমতলী এলাকায় একটি একতলা মার্কেট এবং ঢাকার পূর্বাচল এলাকায় ১০ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এসবের বাজারমূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
এ ছাড়া রাজধানীর রমনা ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে। এফ প্রিমিও ও মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের দুটি গাড়িরও মালিক তিনি। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ জমা অর্থের প্রমাণ এখন পর্যন্ত তাঁদের হাতে আসেনি বলে দুদকের সূত্রটি জানিয়েছে।