কাজ বন্ধ রেখেছেন ১০ কারখানার শ্রমিক

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকার আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। সেখানে অন্তত ১০টি কারখানায় কাজ না করে বের হয়ে গেছেন শ্রমিকেরা। তিনটি কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে ভেতরে অবস্থান করছেন তাঁরা।

আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এই অবস্থা দেখা গেছে। এসব কারখানার প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন। কোনো ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।

শ্রমিকেরা বের হয়ে যাওয়ায় ডিরোজ, পাইওনিয়ার, ওয়াশিং ডিজাইন, পলমল গ্রুপ, আইডিয়াজ, সাফা নিট, ডংজিয়ান, এনভয়সহ কমপক্ষে ১০টি কারখানার কাজ বন্ধ রয়েছে। সেতারা গ্রুপ, বান্দো ডিজাইন, স্টার লিংক ক্রিয়েশন কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে ভেতরে অবস্থান করছেন শ্রমিকেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিকের ভাষ্য, তাঁরা যা বেতন পান, তাতে সংসার চলে না। বাসাভাড়া দিলে সংসার খরচ থাকে না। সংসার খরচ চললে বাসাভাড়া দেওয়া যায় না। ২০১৩ সালের সর্বশেষ মজুরি বোর্ডের বেতন অনুসারে শ্রমিকেরা পান ৫ হাজার ৩০০ টাকা। শ্রমিকেরা ন্যূনতম পাঁচ হাজারের বদলে তাঁদের বেতন ১৫ হাজার টাকা করার দাবি জানান।

এই শ্রমিকেরা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, তাঁরা নিয়ম অনুসারে গ্র্যাচুইটি পান না। প্রয়োজন পড়লে ছুটিও পান না। ছুটি দিলেও বেতন দেওয়া হয় না। কথায় কথায় ছাঁটাই করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ছাঁটাইয়ের সময় প্রাপ্য দেওয়া হয় না। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে হয়রানি করা হয়। মালিকপক্ষ প্রায়ই তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসিনুল কাদির শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পাশাপাশি নানা অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, কোনো কারণে ছাঁটাই হলে নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্য পরিশোধ এবং ছুটিকালীন বেতন বহাল রাখার দাবিতে গত সোমবার থেকে শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করেন। সেদিন আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার উইন্ডি গ্রুপের শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। তারপর গত এক সপ্তাহে উইন্ডি গ্রুপসহ অন্তত ১০টি কারখানার শ্রমিকেরা একই দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। তাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে গতকাল রোববার ১২টি কারখানার পোশাকশ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন।

২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর তৈরি পোশাকশিল্পের ন্যূনতম মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা কার্যকর হয়। তার আগে ন্যূনতম মজুরি ছিল তিন হাজার টাকা। শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রতিটি শিল্পের জন্য পাঁচ বছর পরপর নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠিত হবে। তবে সরকার চাইলে যেকোনো সময় মজুরি কাঠামো সংশোধন ও পরিবর্তনে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ