মৃত্যুঞ্জয়ী নায়ার
স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: গন্তব্যটা তাঁর যেন জানাই ছিল। সেই জানা গন্তব্য ধরেই এগিয়ে গেছেন বড় লক্ষ্যের দিকে। জীবনের তৃতীয় ইনিংসেই ট্রিপল সেঞ্চুরি! যেখানে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিই বড় এক ব্যাপার, সেখানে প্রথম সেঞ্চুরিটাকে ‘ট্রিপলে’ রূপ দিতে পারার ব্যাপারটি করুণ নায়ারকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। কী অসম্ভব ধৈর্য আর সাহসের সঙ্গে ইংলিশ বোলারদের অসহায় বানিয়ে অপরাজিত ৩০৩ রান করে মাঠ ছাড়েন তিনি। নায়ারের অসীম এই সাহসের উৎস কোথায়?
কালকের আগে পর্যন্তও সংবাদমাধ্যমের উৎসুক দৃষ্টির আড়ালেই ছিলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে খুব বেশি লেখা কখনো হয়নি। সে কারণেই হয়তো নায়ারের জীবনের অনেক বড় একটা ঘটনা আড়ালেই চলে গিয়েছিল। যে ঘটনা নায়ারের স্নায়ুকে করে দিয়েছে ইস্পাতের মতো দৃঢ়। বেশি দিন আগের নয়, ঘটনাটা গত জুলাইয়ের। মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছেন নায়ার।
কেরালার সন্তান নায়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন কর্নাটকের হয়ে। জুলাইয়ে কেরালায় এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। উৎসবের একটি পর্ব ছিল নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো। এটা পালন করতে গিয়েই ঘটেছিল বিপত্তি। নৌকা উল্টে যায় অথই জলে। সাঁতার না–জানা নায়ার ডুবে মরতেই চলেছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সাহায্যে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
এমন পরিস্থিতি থেকে বেঁচে ফেরার পর নায়ারের কি আর সাহসী না হয়ে উপায় আছে! ট্রিপল সেঞ্চুরি করার পথে উত্তেজিত স্নায়ুকে শান্ত রাখার শিক্ষাটা তিনি পেয়ে গিয়েছিলেন তো তখনই। সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা এখনো টাটকা নায়ারের মনে, ‘আমি সাঁতার জানি না। মানুষ আমাকে উদ্ধার করে। আমি ভাগ্যবান যে এখনো বেঁচে আছি।’
দুর্দান্ত এই ট্রিপল সেঞ্চুরির পথে কি এতটুকু চাপ অনুভব করেননি নায়ার! প্রথম ১০০ রান অবশ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাঁর কাছে। কিন্তু এর পরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসে, ‘প্রথম সেঞ্চুরিটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম ১০০ রান করে ফেলার পর আমি আর কোনো চাপ অনুভব করিনি। এরপর আমি শুধু নিজের স্বাভাবিক খেলাটিই খেলে গিয়েছি।’
সূত্র: এনডিটিভি