ছেলের জন্ম দিলেন কেইট
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ যুক্তরাজ্যের কোটি মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে; তারা জানতে পেরেছেন, রাজপরিবারে নতুন অতিথি হিসেবে একটি ছেলে উপহার দিয়েছেন কেইট মিডলটন।
সোমবার প্রসব বেদনা নিয়ে কেইট লন্ডনের সেইন্ট মেরি হাসপাতালে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে দেশটির মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। কারণ কেইটের এই সন্তানই এক সময়ে সিংহাসনে বসবেন।স্ত্রী কেইটকে নিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৬টার দিকে রাজকীয় গাড়িতে চড়ে পশ্চিম লন্ডনের ওই হাসপাতালে যান সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়াম।তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরুর দেড ঘণ্টার মাথায় রাজপ্রাসাদের টুইটার পেইজে ঘোষণা- সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন যুবরাজের স্ত্রী, যে হবে সিংহাসনের তৃতীয় উত্তরাধিকারী।রাজপ্রাসাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় পরে জানানো হয়, “ডাচেস একটি গাড়িতে করে ডিউক অব কেমব্রিজকে নিয়ে কিংস্টন প্যালেস থেকে সেইন্ট মেরি হাসপাতালের লিন্ডো উইংয়ে গিয়েছেন।”এই খবর পাওয়ার পরপরই ওই হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান সাংবাদিকরা, ভিড় জমে উৎসুক জনতারও। লোকারণ্য হয়ে ওঠে বাকিংহাম প্যালেস প্রাঙ্গণও।সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে রাতে রাজপ্রাসাদ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন কেইট।দীর্ঘ অপেক্ষার পর খবর জেনে ট্যাবলয়েড দৈনিক দ্য সান তার পাঠকদের জানিয়েছে এভাবে- ‘ছেলে হয়েছে।”
নবজাতকের জন্ম সোমবার বিকাল ৪টা ২৪ মিনিটে বলে জানানো হয়। আট পাউন্ড ছয় আউন্স ওজনের শিশুটি সুস্থ বলেও সবাইকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।মা-ও সুস্থ আছেন এবং সন্তান নিয়ে রাতে হাসপাতালেই থাকবেন বলে জানিয়েছে রাজপ্রাসাদ।ডিউক অফ কেমব্রিজের কার্যালয়কে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, নিজের প্রথম সন্তান জন্মের সময় স্ত্রীর পাশেই ছিলেন সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়াম।এছাড়াও ছিলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তার স্বামী ডিউক অফ এডিনবরা, উইলিয়ামের বাবা চার্লস, উইলিয়ামের ভাই হ্যারিসহ রাজপরিবারের সদস্যরা।“তারা সবাই উৎফুল্ল,” বলা হয় বিবৃতিতে।প্রথমবার দাদা হতে হতে পেরে গর্ব বোধ করছেন চার্লস। এক বিবৃতিতে নিজের খুশির সঙ্গে তিনি আরো বলেন, এটা উইলিয়াম ও কেইটের জন্য বিশেষ একটি মুহূর্ত।যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন টুইটারে লিখেছেন, “শুধু আমি নই, পুরো দেশবাসী আনন্দের সাগরে ভাসছে।”বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড টুইটে নবজাতকের সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন তার বাবা-মাকে।
কেইট হাসপাতালে যাওয়ার পরপরই তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরুর দেড় ঘণ্টার মাথায় রাজপ্রাসাদের টুইটার পেইজে ঘোষণা আসে- সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন যুবরাজের স্ত্রী, যে হবে সিংহাসনের তৃতীয় উত্তরাধিকারী।রাজপ্রাসাদ থেকে ডাচেসকে সেইন্ট মেরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর থেকেই গার্ডিয়ান, বিবিসি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ডেইলি মিরর, দ্য সান, ডেইলি মেইলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক অনেক সংবাদ মাধ্যমই সরাসরি সম্প্রচার করতে থাকে সর্বশেষ খবর।লন্ডনের ওই হাসপাতালেই ব্রিটিশ রাজপরিবার চিকিৎসা নিয়ে থাকে। সিংহাসনের প্রথম উত্তরাধিকারী চার্লসের বড় ছেলে ও কেইটের স্বামী উইলিয়াম ১৯৮২ সালে এখানেই জন্মেছিলেন। চার্লস-ডায়নার দ্বিতীয় সন্তান হ্যরির জন্মও এখানেই।প্রথম সন্তানের আগমনকে সামনে রেখে এক সপ্তাহ আগেই নিজ কর্মস্থল রয়াল এয়ার ফোর্স (আরএএফ) থেকে সাত দিনের ছুটি নিয়ে কেইটের সঙ্গে রয়েছেন উইলিয়াম।চিকিৎসকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী তখনি কেইটের সন্তান জন্ম দেয়ার কথা ছিল বলে ট্যাবলয়েড দৈনিক সান জানিয়েছে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুবরাজকে এখন ছুটি বাড়াতে হচ্ছে।৩১ বছরের উইলিয়াম একই বয়সের কেইটকে বিয়ে করেন ২০১১ সালের এপ্রিলে।নবজাতকের নাম কী হচ্ছে- তা নিয়েও ভাবনার শেষ নেই যুক্তরাজ্যবাসীর। সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন নাম প্রস্তাবও করছেন তারা।বিবিসি জানিয়েছে, অনাগত সন্তান ছেলে, না মেয়ে- তা জানতেন না উইলিয়াম-কেইট। মানে তারা জানতে চাননি।হাসপাতাল ও রাজপ্রাসাদের বাইরে জনতার ঢল নামলেও প্রথা অনুযায়ী নবজাতকের জন্মের খবরটি সবার আগে পান সিংহাসনে থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ; যিনি উইলিয়ামের দাদি।প্রাসাদের বাইরে টাঙিয়ে দেয়া হযেছে সুখবর, তাই দেখে উচ্ছ্বসিত এক ব্রিটিশ নারীসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর রাজপরিবারের একজন উপদেষ্টা চিকিৎসকের স্বাক্ষরসহ একটি লিখিত কাগজ নিয়ে হাসপাতালের বাইরে যান। তা দেখেই ঘটনার অগ্রগতি আঁচ করে উৎসুক জনতা।বাকিংহ্যাম প্যালেসের বাইরে রানি দেখার পর বিশেষ একটি কাঠের ফ্রেমে চিকিৎসক স্বাক্ষরিত একটি ঘোষণাপত্র দিলেই সবাই জানতে পারেন, তারা যুবরাজ পেয়েছেন।সেই সঙ্গে রাজঘোষক হাসপাতালের সামনে একই ঘোষণা দেন।এরপর নবাগতকে যুক্তরাজ্যের টাওয়ার অব লন্ডনে ৬২টি গান স্যালুট এবং গ্রিন পার্কে ৪১টি গান স্যালুট দিয়ে বরণ করা হয়।অবকাশে স্কটল্যান্ডে থাকা রানি এলিজাবেথ নাতবৌ কেইটের হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে সোমবারই বাকিংহাম প্যালেসে ফেরেন।অনাগত শিশুটিকে নিয়ে রানির ঘোষণার আগে পেশাদার বাজিকররাও নিজেদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।অধিকাংশই মনে করছিলেন, রাজপ্রাসাদ আলো করে আসবে রাজকন্যা, আর এর পক্ষেই বাজির দর ছিল বেশি।কেইট পুত্র সন্তানের আশা করলেও উইলিয়ামের পছন্দ ছিল কন্যা সন্তান।“আমি চাই ছেলে আর উইলিয়ামের পছন্দ মেয়ে। এটা সব সময় সব ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে,” কেইট আগে একথা বলেছিলেন।তবে উইলিয়ামের মেয়ে হলেও সিংহাসনে আরোহণে কোনো বাধা ছিল না।পরিবর্তিত নীতির ফলে, সিংহাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে ছেলে বা মেয়ে কোনো বাধা হবে না।