হাসিনার অধীনে নির্বাচন মানব না : খালেদা জিয়া
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রচারের সুযোগ রেখে সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা সংশোধনে ইসির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া।
দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা মন্ত্রিসভার ওই সিদ্ধান্ত মানি না।
“আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই হবে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।”
মঙ্গলবার সংসদ ভবনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্যে একথা বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আচরণবিধির একটি খসড়া তৈরি করে তা কমিশনে পাঠালেও সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনার খবর পাওয়া যায়নি।
বর্তমান সংবিধানের আলোকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ার সুযোগ রেখে ইসি সচিবালয় ওই খসড়া তৈরি করেছে।
১৯৯৬ সাল থেকে পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে নির্বাচনের সময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব পালন করলেও সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে এখন নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।
নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীরা নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা সংশোধনের প্রয়োজন পড়েছে।
আওয়ামী লীগ সংশোধিত সংবিধানের আলোকে তারা ক্ষমতাসীন অবস্থায় নির্বাচনের পক্ষপাতি হলেও বিএনপি বলছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনও করছে বিএনপি। তাদের জোট শরিক জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচনী বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, “নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের পক্ষপাতদুষ্ট ও একপেশে প্রস্তাব উত্থাপন করে নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। জাতির কাছে প্রমাণিত হয়েছে, এ নির্বাচন কমিশন সরকারের হাতের পুতুল।”
পেশাজীবী পরিষদের ইফতার অনুষ্ঠানে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সময়ে পদ-পদবী ব্যবহার করে সারাদেশে ঘোরাফেরা করতে পারবেন।
“এটা হলে কোনো সরকারি কর্মকর্তার ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে- প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বাইরে কিছু করে। এরকম হলে কোনোভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।”
খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ঈদের পর একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “দেশের অবস্থা ভালো নয়। প্রতিটি মানুষ আজ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তারা এই জালেম-দুর্নীতিবাজ-খুনি সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “ঈদের পর এই সরকারকে হটিয়ে দিতে হবে। এজন্য পেশাজীবীদের আন্দোলনে নামতে হবে। যা ইচ্ছা তা করার ক্ষমতা এই সরকার নেই।”
ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন- আর এ গনি, রফিকুল ইসলাম মিয়া, জমিরউদ্দিন সরকার, সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, জয়নাল আবেদীন, জয়নুল আবদিন ফারুক, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খায়রুল কবীর খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ।
অধ্যাপক এম এ মাজেদ, ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক চাষী নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদ, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম আজিজুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, অ্যাব সভাপতি আ ন ম আখতার হোসেন, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উন-নবী মজুমদার বাবলা, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি আবদুস শহিদ, এমবি অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।