হামলার অভিযোগে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল সোমবার রাত থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা ধর্মঘট শুরু করেছেন। রোগীর স্বজনদের হাতে আহত হওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ধর্মঘট ডাকেন তাঁরা। ওই রোগীর স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
আহত ইন্টার্ন চিকিৎসকের নাম আবু নাঈম পরাগ। রোগীর গ্রেপ্তার হওয়া স্বামীর নাম জিমি (৩১)। তাঁর বাড়ি নগরের অলকার মোড় এলাকায়।
ধর্মঘট চলাকালে বেলা পৌনে একটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট বন্ধ করে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কিছুক্ষণ পর গেট খুলে দেওয়া হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা মিছিল নিয়ে নগরের লক্ষ্মীপুরের দিকে চলে যান।
হাসপাতালের উপপরিচালক সিরাজুল করিমের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যার দিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর একজন স্বজন অভিযোগ করেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক আবু নাঈম তাঁকে ধাক্কা দিয়েছেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। রোগীর স্বজনেরা আবুর চোখেমুখে কিলঘুষি মারেন। তাঁরা কয়েকজন ছিলেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন একা।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, রোগীর গ্রেপ্তার হওয়া স্বামী জিমি অভিযোগ করেছেন, স্ত্রীর ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ায় কথা-কাটাকাটি শুরু হয়েছিল।
রোগী বা তাঁর স্বজনদের অবস্থান না জানায় এ ঘটনা নিয়ে তাঁদের কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
হাসপাতালের উপপরিচালক সিরাজুল করিম আরও অভিযোগ করেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক আবুর চোখে ব্যান্ডেজ লাগাতে হয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম করার কথা বলে স্বজনেরা রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে গেছেন। রোগীর নাম-ঠিকানা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতেই মামলা হয়েছে এবং রোগীর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হাসপাতালের উপপরিচালক সিরাজুল করিম বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। তখন তাঁরা ধর্মঘটের ঘোষণা দেননি। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, আজ মঙ্গলবার সকালে কেউ কাজে আসেননি।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহর ভাষ্য, রোগীর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে আহত ইন্টার্ন চিকিৎসক আবুর ছবি দিয়ে তাঁর একজন সহকর্মী লিখেছেন, ‘নতুন করে কিছু বলার নেই। খবরটা ঠিক আপনাদের মুখরোচক হবে না বলে জাতীয় পত্রিকায় আসবে না। তাই আমরাই বলে যাই। মেডিকেল কলেজে গাইনি বিভাগের কর্মরত থাকা অবস্থায় আমাদের এই ইন্টার্ন ভাইকে রোগীর সঙ্গে থাকা কয়েকজন বহিরাগত অহেতুক আহত করে রেখে যায়। উপকারী গাছের ছাল থাকে না—এই নীতিতে বিশ্বাস করে আপনারা যদি মনে করেন ডাক্তারের ছালের কোনো দাম নেই, তাহলে আমরাও বলে রাখি, আমরা “চ্যারিটি বিগিন্স এট হোম” নীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের বাবা-মায়ের কষ্টে গড়া ডাক্তারের ছাল আপনাদের তুলতে দেব না। এ দেশের প্রবীণ ডাক্তার, যাঁরা এসব দেখেও চুপ করে থাকেন, তাঁদের উদ্দেশে বলি, এই মাইর খাওয়া ইন্টার্ন সম্প্রদায়ও একদিন বড় হবে। হুঁশিয়ার সাবধান।’